র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বিদায়ী মহাপরিচালক (ডিজি) ও সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কাজ করছে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে তাদের নিষেধাজ্ঞায় র্যাবের কর্মকাণ্ডে কোনো প্রভাব ফেলেনি।
বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মহাপরিচালকের বিদায়ী মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার ওপর যে আস্থা রেখেছেন সেই দায়িত্ব যেন আমি যথাযথভাবে পালন করতে পারি। আমি র্যাব ডিজি হিসেবে বৈশ্বিক মহামারির সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম। করোনা আক্রান্ত র্যাব সদস্যদের জন্য ডাটাবেজ, অত্যাধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। বিপুল সংখ্যক র্যাব সদস্য করোনা আক্রান্ত হলেও আমরা মনোবল হারাইনি। করোনায় মানবিকতার চরম বিপর্যয় ঘটেছিল। এ সময় র্যাব সদস্যরা করোনা আক্রান্ত মানুষদের সেবায় এগিয়ে গিয়েছেন। র্যাবের হেলিকপ্টারে দুর্গম এলাকা থেকে মানুষকে উদ্ধার করে ঢাকায় এনে চিকিৎসা সেবা দিয়েছে।
র্যাবের বিদায়ী মহাপরিচালক আরও বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনা মোকাবিলা ছিল মূল চ্যালেঞ্জ।
স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে যারা মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছিল তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘করোনার কিট জালিয়াত ও রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রতারক সাহেদ করিমকে আমরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হই।
২ বছর ৫ মাস ১৪ দিন র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি উল্লেখ করে র্যাবের বিদায়ী মহাপরিচালক বলেন, করোনাকালে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত ছিল। সুপথে ফিরে আসা জঙ্গিদের পুনর্বাসন করা হয়েছে। দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত সুন্দরবনকে দস্যমুক্ত করা হয়েছে।
এই কর্মকর্তা জানান, মাদক নিয়ন্ত্রণে নেই এটা বলার সুযোগ নেই। মাদকের উৎস বন্ধে কার্যকর ভূমিকা পালনে ৩৬ হাজার মাদক কারবারী, পাচারকারী, পরিবহনকারীকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দুই হাজার অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রেফতার, চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন, দীর্ঘদিনের পলাতক আসামিদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া বাড়ানো হয়েছে সাইবার নজরদারিও।
প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা বড় অর্জন এ কথা উল্লেখে করে বিদায়ী মহাপরিচালক বলেন, পুলিশ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। যেখানে প্রয়োজন হয় সেখানেই পুলিশ শক্তি প্রয়োগ করে। আক্রমণ এলে পাল্টা আক্রমণ করা হয়।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি পুলিশপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
এর আগে ২০২০ সালের ৮ এপ্রিল র্যাবের ডিজি হিসেবে তিনি দায়িত্ব পান।