পরিবহন ধর্মঘটে অচল সিলেট

Slider ফুলজান বিবির বাংলা


পরিবহন ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে সিলেট নগরী। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে শ্রমিকরা ধর্মঘট শুরু করেছেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন জনসাধারণ। ‘সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের’ ডাকে চলছে এ ধর্মঘট।

ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি বন্ধ, শ্রম আদালত থেকে শ্রমিক প্রতিনিধি নাজমুল আলম রোমেনকে প্রত্যাহার, হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে বন্ধ পাথর কোয়ারি খুলে দেয়া, ভাঙা সড়ক সংস্কার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা বিক্রি বন্ধ করা এবং অটোরিকশার রেজিস্ট্রেশন দেয়াসহ মোট পাঁচ দফা দাবিতে পরিষদ এ আন্দোলন কর্মসূচি দিয়েছে।

ভোর থেকে নগরীর বিভিন্ন সড়কে ‘পিকেটিং’ শুরু করেছেন পরিবেহন শ্রমিকরা। তারা কোনো ধরনের গণপরিবহন বা পণ্যবাহী গাড়ি চলতে দিচ্ছেন না। এতে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থী এবং চাকরিজীবীরা বেশ ভোগান্তিতে পড়েছেন।

এদিকে সোমবার রাতে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছিল প্রশাসন। তবে সে অনুরোধকে প্রত্যাখ্যান করে ভোর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট পালনে নিজেদের অবস্থানে অটল রয়েছেন সিলেটের পরিবহন শ্রমিক নেতারা।

জানা গেছে, মঙ্গলবার জেলায় এবং বুধবার থেকে পুরো সিলেট বিভাগে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।

সিলেট বিভাগের সব পরিবহন শ্রমিক বেশ কিছুদিন ধরে ৫ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ধর্মঘট পালনসহ মিছিল-সভা করে আসছেন। তাদের দাবিগুলো হচ্ছেঃ সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) কমিশনার ও উপকমিশনারের (ট্রাফিক) অপসারণ, ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি ও রেকার বাণিজ্যসহ মাত্রাতিরিক্ত জরিমানা বন্ধ, সিলেটে শ্রম আদালতের প্রতিনিধি শ্রমিক লীগের নাম ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তারকারী নাজমুল আলম রোমেনকে প্রত্যাহার, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে পাথর কোয়ারি খুলে দেয়া, ভাঙাচোরা রাস্তাগুলোর দ্রুত সংস্কার এবং নতুন সিএনজিচালিত অটোরিকশা বিক্রি বন্ধ ও বিক্রয়কৃত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দেয়া। এ ছাড়া অনুমোদনহীন গাড়ি যেমন অটোবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ডাম্পিং করা গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার দাবি জানিয়ে আসছেন পরিবহন শ্রমিকরা।

পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনের পথে হাঁটলেও শুধু আশ্বাসের মধ্যেই তাদের বারবার আটকে রাখে প্রশাসন। তাদের কোনো একটি দাবিও এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে তারা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

এদিকে এ আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করেছেন পরিবহন শ্রমিকদের ৬টি রেজিস্ট্রার্ড সংগঠন। এ ৬টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের’ ডাকে এ কর্মসূচি পালিত হবে। এ বিষয়ে রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) ‘সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের’ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ধর্মঘটের ঘোষণা জানিয়ে সোমবার সিলেটে মাইকিংও করেন পরিবহন শ্রমিকরা।

সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের অন্তর্ভুক্ত সংগঠনগুলো হচ্ছে: সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন, সিলেট জেলা ট্রাক পিকাপ কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন, ইমা লেগুনা হিউম্যান হুলার শ্রমিক ইউনিয়ন, সিলেট জেলা অটো টেম্পু অটোরিকশা শ্রমিক জোট, সিলেট জেলা ট্যাংক-লরি শ্রমিক ইউনিয়ন, সিলেট জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *