মায়ের মৃত্যুর পর ৭৩ বছর বয়সে ব্রিটেনের রাজা হলেন যুবরাজ চার্লস। ৭৩ বছর বয়সী চার্লস ১৯৬৯ সালে বাকিংহাম প্যালেসে মাথায় যুবরাজের মুকুট পরেন। তার উপাধি ‘প্রিন্স অব ওয়েলস’ এখন যাবে তার বড়ে ছেলে প্রিন্স উলিয়ামের মাথায়।
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের নিয়ম অনুযায়ী, রানির মৃত্যুর পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে এবং কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই রাজার পদবি পাবেন সাবেক প্রিন্স অব ওয়েলস চার্লস। তিনি ‘রাজা তৃতীয় চার্লস’ নামে পরিচিত হবেন। তবে, তিনি তার চারটি নামের যেকোনো একটি বেছে নিতে পারবেন। নামগুলো হলো- চার্লস ফিলিপ আর্থার জর্জ। একই সঙ্গে তিনি ১৪টি কমনওয়েলথ দেশেরও রাজা হবেন।
নতুন রাজা চার্লসকে বেশকিছু আনুষ্ঠানিকতা পার করতে হবে। রানির মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজা ঘোষণা করা হবে। লন্ডনের সেইন্ট জেমসেস প্যালেসে ‘অ্যাকসেশন কাউন্সিল’ এ ঘোষণা দেবে। কাউন্সিলের সদস্যরা হলেন- সাবেক ও বর্তমান জ্যেষ্ঠ এমপিদের একটি দল, জ্যেষ্ঠ বেসামরিক কর্মকর্তা, কমনওয়েলথের হাই কমিশনারগণ এবং লন্ডনের লর্ড মেয়র। এর সদস্য সংখ্যা সাতশোর বেশি। তবে, সময় সংক্ষিপ্ত হওয়ায় ‘অ্যাকসেশন কাউন্সিল’-এর সব সদস্য উপস্থিত থাকতে পারবেন না।
সর্বশেষ ১৯৫২ সালে অনুষ্ঠিত অ্যাকসেশন কাউন্সিলে উপস্থিত ছিলেন মাত্র দুইশো সদস্য। এ সময় নতুন রাজার অংশ নেওয়ার রেওয়াজ নেই।
অ্যাকসেশন কাউন্সিল একদিন পর আবারও সভা বসবে। এখানে নতুন রাজা উপস্থিত থাকবেন।
রেওয়াজ অনুসারে, ব্রিটিশ রাজা হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের সময় ‘শপথ বাক্য’ পাঠ করানো হবে না। এক্ষেত্রে একটি ঘোষণা দেওয়া হবে। ১৮ শতকের প্রথম দিকের রেওয়াজের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চার্লস স্কটল্যান্ডের চার্চকে রক্ষা করার শপথ করবেন। তিনি উচ্চারণ করবেন, ‘গড সেইভ দ্য কিং’ (ঈশ্বর রাজাকে রক্ষা করুন)। ১৯৫২ সালের পর প্রথম ইংল্যান্ডের জাতীয় সঙ্গীতে ‘গড সেইভ দ্য কুইন’-এর বদলে বসবে এ শব্দগুলো।
এদিকে, চার্লসের স্ত্রীর জন্যও থাকছে নতুন পরিচয়। ক্যামিলা পার্কার পরিচিত হবেন কুইন কনসর্ট হিসেবে। তার বড় ছেলে প্রিন্স উইলিয়াম অবশ্য চার্লসের ছেড়ে যাওয়া প্রিন্স অব ওয়েলস পদবি সঙ্গে সঙ্গে পাবেন না। বাবার ডিউক অব কর্নওয়াল পদবি পরবর্তীতে তার হয়ে যাবে। উইলিয়ামের স্ত্রী ক্যাথেরিন সেক্ষেত্রে হচ্ছেন ডাচেস অফ কর্নওয়াল।
এদিকে, মা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অসুস্থতার খবর পেয়েই স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদে ছুটে যান চার ছেলে-মেয়ে। তারা হলেন- যুবরাজ চার্লস (৭৩), রাজকুমারী অ্যান (৭২), যুবরাজ অ্যান্ড্রিউ (৬২) ও যুবরাজ এডওয়ার্ড (৫৮)। চার্লসের বড় ছেলে যুবরাজ উইলিয়ামও পৌঁছে যান সেখানে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ছুটে আসেন উইলিয়ামের ভাই হ্যারি এবং তার স্ত্রী মেগান। তারপরই আসে রানির মৃত্যুর খবর।
৭৩ বছর বয়সি চার্লস ১৯৬৯ সালে মাথায় যুবরাজের মুকুট পরেন।
রানির দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর বাকিংহাম প্যালেস থেকে একটি বিবৃতি জারি করে শোক প্রকাশ করা হয়। সেই বিবৃতিও জারি করা হয় রাজা চার্লসের তরফ থেকে।