পরীমনির সাড়ে ৩ কোটি টাকায় কেনা গাড়ির, নানা রহস্য

Slider বিচিত্র

পরীমনি। রুপালি পর্দার আলোচিত এক অভিনেত্রী। চলচ্চিত্র ছাড়াও নানা কারণে শিরোনামে এসেছেন বারবার। বিতর্ক যেন তার পিছু ছাড়ছে না। উত্তরার বোট ক্লাবের ঘটনা এবং গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবে ভাঙচুরের অভিযোগের পর তাকে নিয়ে নানা আলোচনা দেশজুড়ে। এর মধ্যে সাড়ে ৩ কোটি টাকায় কেনা গাড়ির বিষয়টিও এখন সামনে এসেছে। ২০২০ সালের ২৪শে জুন তার সাদা রঙের হ্যারিয়ার গাড়িটি দুর্ঘটনায় দুমড়ে মুচড়ে যায়। এর ২৪ ঘণ্টা পার হতে না হতেই তিনি প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার রয়েল ব্লু-রঙের মাসেরাতি গাড়ি কেনেন। ইতালিয়ান অভিজাত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফিয়াট অটোমোবাইলসের জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ‘মাসেরাতি’।

গাড়িটি কিনে পরীমনি ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাল হয়ে যায় তা। চলচ্চিত্র পাড়ায় তৈরি হয় নানা গুঞ্জন। কে দিয়েছেন পরীমনিকে ওই গাড়িটি? উত্তরার বোট ক্লাবের ঘটনার পর পরীমনি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে যান। তাকে গোয়েন্দা পুলিশ ওই ঘটনাসহ আরও কিছু বিষয় নিয়ে জেরা করেন। কথা প্রসঙ্গে তার গাড়িটির কথা উঠে আসে। গাড়ির প্রসঙ্গে গোয়েন্দাদের জেরায় তিনি বিব্রতবোধ করেন এবং ওই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নিজের ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দিয়ে পরীমনি জানান, উত্তরার বোট ক্লাবে তাকে হত্যা ও ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। এই ঘটনায় সাভার থানায় ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। পরে পুলিশ উত্তরা এক নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের একটি বাসা থেকে নাসির উদ্দিন মাহমুদ, অমিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।

নাসিরের মাদক মামলার প্রধান সমন্বয়কারী তদন্তকারী ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের ডিসি মো. মশিউর রহমান জানান, ‘মামলাটি তারা তদন্ত করছেন। তদন্তের স্বার্থে কিছু বলা যাচ্ছে না।’

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা এবং পরীমনির ছবি পরিচালনাকারী এক পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গভীর রাতে পরীমনি বিভিন্ন ক্লাবে ঘুরে বেড়াতেন। তার বাসায়ও একটি মিনি বারের মতো জায়গা রয়েছে। ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ ক্লাবগুলোতে সদস্য ছাড়া প্রবেশের কোনো অনুমতি না থাকলেও ওইসব ক্লাবগুলোতে তিনি নিয়মিত যাতায়াত করতেন।

সূত্র জানায়, গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবে তার এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরিচয় হয়। ওই ব্যবসায়ী থাকেন ঢাকার অভিজাত এলাকায়। তিনিও গত বছরের মাঝামাঝিতে একটি বিষয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন। পরে তৃতীয় পক্ষ ওই ঝামেলা মিটিয়ে দেন।

সূত্র জানায়, গুলশানের ওই ক্লাবে যাতায়াতের সূত্রে ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তাদের মধ্যে যে সম্পর্ক বা ঘনিষ্ঠতা হয় তার পেছনে রয়েছেন চলচ্চিত্রের একজন তরুণ পরিচালক। যিনি তার প্রথম ছবি করেই বাজিমাত করেছেন। পেয়েছেন একাধিক পুরস্কারও। পরীমনির সঙ্গে ওই ব্যবসায়ীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গুঞ্জন রয়েছে, পরীমনির গাড়িটি এই সূত্রেই পেয়েছেন। যদিও পরীমনি এ ব্যাপারে কিছুই বলছেন না। তিনি চুপ থাকার কারণে গাড়িটি নিয়ে নানা রহস্য চারদিকে।
সূত্র জানায়, পরীমনি ঢাকার একাধিক ক্লাবে গিয়ে ওই ব্যবসায়ীর পরিচয় দিতেন। ওই ব্যবসায়ী আবার ঢাকার একাধিক ক্লাবের সদস্য। তাকে ক্লাবে ঢুকতে না দিলে কখনো কখনো তিনি সরাসরি ওই ব্যবসায়ীকে দিয়ে তদবির করাতেন। বোট ক্লাবে পরীমনির ঘটনায় ওই ব্যবসায়ী এখন চুপসে গেছেন। কিছুদিন আগে তিনি ব্যবসায়িক কাজে দুবাই গিয়েছিলেন। বোট ক্লাবের ঘটনার পর ওই ব্যবসায়ী গুলশানের ক্লাবেও যান না বলে জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *