চেয়ারম্যান শাখাওয়াত বাইরে থাকলে তদন্ত প্রভাবিত হবে!

Slider টপ নিউজ

গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এবং সদর ইউপি চেয়ারম্যান শাখাওয়াত হোসেন প্রধান গৃহকর্মীকে ধর্ষণের ঘটনায় সম্প্রতি আলোচনায় এসেছেন। ধর্ষণ ও অপহরণ মামলা সহ বিভিন্ন মিডিয়ায় একাধিকবার নিউজ হয়! সেই সাথে বেরিয়ে আসে বিভিন্ন অপকর্মের চাঞ্চল্যকর তথ্য।

আজকের পর্বে থাকছে তার বিবাহিত স্ত্রী, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক এবং জিরো থেকে বিপুল বিত্তশালী হতে যেসকল অপকর্ম করেছেন সেসব তথ্য। বিষয় গুলো প্রাসঙ্গিকভাবে আলোচনায় উঠে আসা জরুরি বলে মনে করছি। মাঠ পর্যায়ে তথ্য নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরী করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি কয়েকটি পর্বে তুলে ধরা হচ্ছে।

গত ২৮ শে আগষ্ট ২০২২ তারিখ রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওটি ধারণ করা হয় ১৫ ই আগষ্ট ২০২২ ইং তারিখে। সে ভিডিওতে দেখা যায় একজন ১৫ বছরের গৃহকর্মী তার সদ্যোজাত সন্তানের পিতা হিসেবে শাখাওয়াত চেয়ারম্যানের নাম উল্লেখ করে এবং চেয়ারম্যান কর্তৃক একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে জানায়। পরদিন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার হয়! চেয়ারম্যান শাখাওয়াত হোসেন ঘটনা ধামাচাপা দিতে মেয়েটিকে তার শিশু সন্তান সহ অপহরণ করেন। মেয়ের বাবা তার মেয়েকে ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগে আদালতে মামলা করেন, মামলাটি বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে।

অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, ১৫ তারিখ ঘটনাটি সাংবাদিকদের সামনে আসলেও তা ২৮ তারিখ পর্যন্ত কেন মিডিয়ায় প্রচার হয়নি? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে গিয়ে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায়, কাপাসিয়ার স্থানীয় সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করতে স্থানীয় একজন সাংবাদিকের মাধ্যমে ১৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেন চেয়ারম্যান শাখাওয়াত হোসেন প্রধান। সেই সাংবাদিক ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন ‘পত্রিকার কাপাসিয়ার স্থানীয় প্রতিনিধি। তাকে ‘সাংবাদিক জিন্না’ নামে সকলেই চেনেন।যে কারণে ১৫ তারিখে ধারণ করা ভিডিও মিডিয়ায় আসতে ২৮ তারিখ হয়ে যায়। সাংবাদিক ম্যানেজ করার এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বুঝা যায় ঘটনার সাথে চেয়ারম্যানের সম্পৃক্ততা রয়েছে।

এতো বড় বরাদ্দের পরও গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশিত হলে চেয়ারম্যান দিশেহারা হয়ে পড়েন। কাপাসিয়া থানায় জিডি করেন বিভিন্ন মিডিয়ার সংবাদ কর্মীর বিরুদ্ধে। জিডিতে উল্লেখ করা হয় তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে, সেই ষড়যন্ত্রের সাথে একজন মহিলা মেম্বার সহ আরও অনেকে জড়িত রয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন।

এদিকে চেয়ারম্যান শাখাওয়াত হোসেন সম্পর্কে তথ্য নিতে গিয়ে বেরিয়ে আসতে থাকে তার বিভিন্ন অপকর্মের ফিরিস্তি। তার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় সামনে চলে আসে। জানা যায় তিনি বিবাহিত জীবনেও সুখী নন। তাই একাধিক বিয়ে করেছেন। তার একাধিক বিয়ে করার পেছনেও রয়েছে বিভিন্ন মুখরোচক গল্প।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চেয়ারম্যান সাহেবের স্ত্রীর সংখ্যা ৩ জন। ওনার নেশা হলো নারী এবং টাকা। শুধু শারিরীক চাহিদার জন্য বিয়ে করেননি তিনি, আর্থিক কারণেও তিনি বিয়ে করেছেন। পূর্বের দুই স্ত্রী থাকার পরও সাখাওয়াত চেয়ারম্যান গত তিন মাস আগে একজন বিধবা মহিলাকে দুই সন্তান সহ বিয়ে করেছেন। এই বিধবা মহিলা বিশাল অর্থ সম্পদের মালিক। ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ টাকা রয়েছে, সেই সাথে কাপাসিয়া বাজারে পুরোনো সোনালী ব্যাংক মার্কেটের মালিকও এই বিধবা মহিলা। যতোদূর জানা যায়, এই মহিলার স্বামী ছিলেন একজন নামকরা আদম ব্যবসায়ী। ঐ ব্যবসায়ীর নাম জামান। দুই কন্যা সন্তান সহ মহিলার নামে অঢেল সহায় সম্পত্তি রেখে জামান সাহেব মারা যান। এই মহিলা দুই সন্তান সহ গাজীপুরে নিজস্ব বহুতল ভবনে বর্তমানে বসবাস করছেন। এই মহিলাকে বিয়ে করার মাধ্যমে তিনি বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক বনে গেছেন এমনটাই জানাগেছে।

তার মানে হলো – কাপাসিয়া এলাকার সবচেয়ে ধনাঢ্য ব্যক্তি এখন শাখাওয়াত চেয়ারম্যান। কিন্তু বর্তমান নয়, আমরা খুজতে চাই এই বিধবা মহিলাকে বিয়ের আগে তার বিত্তবান হওয়ার গল্প! এই বিয়ে করেছেন সম্প্রতি, এর আগে তিনি কি করেছেন? হ্যাঁ, প্রিয় পাঠক! যুবলীগ সভাপতির ক্ষমতা ব্যবহার করে ব্যাপক দুর্নীতি ও লুটপাট করার তথ্য রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সেদিকেও যাবো আমরা, তার আগে তার স্ত্রীদের সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য জানা প্রয়োজন। কারণ, নারীলোভী না হলে একজন মানুষ ঘরের গৃহকর্মীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারেননা। সে কারণেই এ বিষয়ে জানা প্রয়োজন।

বর্তমানে কাপাসিয়ায় বসবাস করছেন নাজমা বেগম ! তিনি শাখাওয়াত চেয়ারম্যানের দ্বিতীয় স্ত্রী। এই নাজমার কথা আমরা জানতে পারি গৃহকর্মীর বাসায় যাতায়াত করার মাধ্যমে। নাজমা বেগমই প্রথম জানতে পারেন, তার স্বামীর সাথে গৃহকর্মীর অনৈতিক সম্পর্কের মাধ্যমে মেয়েটি গর্ভবতী হয়েগেছে। এক পর্যায়ে গর্ভপাত করার জন্য মেয়েটিকে কবিরাজি ওষুধ খাওয়ান। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়না। পরের ঘটনা তো সকলের জানা। আসুন, এই নাজমা বেগম সম্পর্কে একটু জানা যাক।

জানা যায়, চেয়ারম্যান শাখাওয়াতের সাথে বিয়ের আগেও নাজমা বেগমের আরেকটি বিয়ে হয়। বিবাহিত নাজমা বেগমকে অন্য স্বামীর কাছ থেকে ফুসলিয়ে এনে তিনি বিয়ে করেন। নাজমা ছিলেন মূলত ‘গায়েন’ সম্প্রদায়ের মেয়ে। ওনার বাবা মা কাঁচের থালাবাসন, হাতের চূড়ি – এসব ফেরী করে গ্রামাঞ্চলে বিক্রি করতেন। অতি দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। তখন থেকেই নাজমা নারী লোভী শাখাওয়াতের নজরে পড়ে, এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন হয়। এসব কেলেংকারী থেকে মেয়েকে বাচাতে বাবা মা নাজমা বেগমকে নারায়ণগঞ্জে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেন। তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। সেই সংসার ভেঙে নাজমাকে চেয়ারম্যান তুলে এনে বিয়ে করেন। গায়েন সম্প্রদায়ের মেয়ে নাজমা বেগমকে বিয়ে করার বিষয়টি চেয়ারম্যান শাখাওয়াতের প্রথম স্ত্রী মেনে নিতে পারেননি। শুরু হয় সাংসারিক অশান্তি। এদিকে নাজমা বেগমের দুই ভাইকেও শাখাওয়াত চেয়ারম্যান তার কাজে লাগিয়ে দেন। অবশেষে নাজমা বেগম এবং তার ভাইদের চক্রান্তে চেয়ারম্যান শাখাওয়াত হোসেনের প্রথম স্ত্রী সংসার ছাড়তে বাধ্য হয়। প্রথম স্ত্রীর ঘরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। পুত্র সন্তান এখন চেয়ারম্যানের সাথেই রয়েছে।

লক্ষণীয় বিষয় হলো, ২৯ তারিখ রাতে ভিকটিম নিখোঁজ হয়।

চলবে—

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *