সরকার সব সময় চা শ্রমিকদের উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে সচেষ্ট : প্রধানমন্ত্রী

Slider জাতীয়


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার চা শ্রমিকদের উন্নত জীবন নিশ্চিত করার জন্য সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে। তিনি বলেন, তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদের নাগরিকত্ব প্রদান করায় তিনি তাদের প্রতি বিশেষ দায়িত্ব অনুভব করেন।

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা যেমন নাগরিকত্ব দিয়েছিলেন, তেমনি আপনাদের (চা শ্রমিকদের) প্রতি আমার আলাদা দায়িত্ব রয়েছে। আমি সবসময় সেই অনুযায়ী দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছি।’

তিনি শনিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চা শ্রমিকদের সাথে ভার্চুয়ালি মতবিনিময়কালে একথা বলেন।

ভিডিও কনফারেন্সে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট ও চট্টগ্রাম থেকে যোগদানকারী চা শ্রমিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ দায়িত্ব সরকার নেয়ার পর থেকেই চা শিল্পকে বিকশিত করার পাশাপাশি চা শ্রমিকরা যাতে উন্নত জীবনযাপন করতে পারে সে বিষয়ে সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা চা শ্রমিকদের সকল সমস্যা সমাধান এবং চা শিল্পকে (দেশের অন্যান্য অঞ্চলে) ছড়িয়ে দেয়ার জন্য সর্বদা সচেষ্ট রয়েছি। তিনি বলেন, তারা পঞ্চগড়ে নতুন করে চা চাষ শুরু করেছেন।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (বঙ্গবন্ধু) যখন তৎকালীন চা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন তখন এই শিল্পের বিকাশ ও চা শ্রমিকদের উন্নত জীবন নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৫৭ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যখন মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন তখন প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী তাকে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান করেন। জাতির পিতাই চা বোর্ডের প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন। পরে ১৯৫৮ সালে তিনি গ্রেফতার হলে ২৩ অক্টোবর স্বৈরশাসক আইয়ুব খান সে দায়িত্ব কেড়ে নেন। কিন্তু তিনি সেই সময়েই চা-বাগান এবং শ্রমিকদের অবস্থা ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পেরেছিলেন। দায়িত্ব পালনকালে চা শিল্প যেন নব উদ্যমে যাত্রা শুরু করতে পারে সে পদক্ষেপও তিনি নেন।

বঙ্গবন্ধু মতিঝিলে চা বোর্ডের প্রধান কার্যালয়ের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করেন এবং ‘টি অ্যাক্টের ৭ নম্বর ধারার সংশোধনীতে ‘টি লাইসেন্সিং কমিটি বিলুপ্ত করে কমিটির কার্যক্রমকে টি বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে চা গবেষণাগারও নির্মাণ করেন এবং বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানাবিধ সুযোগ-সুবিধারও ব্যবস্থা করেন এবং ’৭০-এর নির্বাচনের প্রাক্কালে চা শ্রমিকদের বিশাল সমাবেশেও তিনি ভাষণ দেন এবং চা শ্রমিকদের অধিকারের কথা বলেন বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানীরা জ্বালাও পোড়াও এবং দেশের বিভিন্ন শিল্প-কারখানা, রাস্তা-ঘাট, অবকাঠামো ধ্বংসের পাশাপাশি চা বাগানেরও ক্ষতি সাধন করে। কিন্তু জাতির পিতা দেশ স্বাধীনের পর পুনরায় এ শিল্পের পুনরুজ্জীবনে পদক্ষেপ নেন।

চা শ্রমিকদের সাম্প্রতিক বিক্ষোভের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, চা বাগানের মালিকদের সাথে আলোচনা করে চা শ্রমিকরা যাতে সঠিকভাবে জীবনযাপন করতে পারে সেজন্য তার সরকার তাদের দৈনিক মজুরি এবং অন্যান্য সুবিধা বৃদ্ধি করেছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি যে আমরা তাদের (চা শ্রমিকদের) দাবিগুলো উপলব্ধি করতে পারি।’

এর আগে গত শনিবার প্রধানমন্ত্রী চা বাগান মালিকদের সাথে বৈঠক করেন যেখানে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয় এবং তাদের জন্য অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা আনুপাতিক হারে বাড়ানো হবে বলেও জানানো হয়।

সূত্র : বাসস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *