বেগুনগাছে টমেটো চাষ করে কৃষকের চমক

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি


গ্রাফটিং পদ্ধতিতে বেগুনগাছে টমেটো চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি ইউনিয়নের হিজুলী গ্রামের কৃষক ফারুক হোসেন। তিনি পাঁচ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে বেগুনগাছে (কলম পদ্ধতিতে) টমেটো চাষ করেছেন। ফলনও পেয়েছেন আশানুরূপ।

আগামীতে বেগুনগাছে টমেটোর আবাদ সম্প্রাসরণ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, বেগুনগাছে টমেটোর চাষ করলে ফলন পাওয়া যাবে দীর্ঘ সময়। সেইসঙ্গে পূরণ হবে ফল ও সবজির চাহিদা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সারি সারি বেগুনগাছের ওপরে দুলছে টমেটোগাছ। থোকায় থোকায় শোভা পাচ্ছে টমেটো। বেগুনগাছে টমেটো চাষের খবরে বিভিন্ন এলাকা থেকে চাষিরা আসছেন, অনেকেই পরামর্শ নিচ্ছেন। গ্রাফটিং পদ্ধতিতে পরীক্ষামূলকভাবে আবাদ করে ভালো ফল পেয়েছেন চাষি ফারুক হোসেন। পাঁচ শতাংশ জমি থেকে ৩০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। আরও ২০ হাজার টাকার টমেটো এখনও জমিতে রয়েছে। তবে টমেটো চাষ করতে তার খরচ হয়েছে মাত্র ১০ হাজার টাকা।

কৃষক ফারুক হোসেন বলেন, একই গাছে দুটি ফসল আবাদের বিষয়টি মাথায় রেখে পরামর্শ নেওয়া হয় কৃষি বিভাগ থেকে। পাঁচ শতাংশ জমির জন্য পৃথকভাবে বেগুন ও টমেটোর বীজতলা তৈরি করি। এরপর বেগুনগাছ বড় হলে তার ডালপালা কেটে টমেটোর ডগা গ্রাফটিং করা হয়। বেগুনগাছ বেশি দিন বাঁচে ও পানি সহনশীল, তাই এ গাছে টমেটো আবাদ করলে অনেক দিন ধরে ফল পাওয়া যাবে। তাছাড়া টমেটো খেতে বেশ সুস্বাদু। টমেটো আবাদে তেমন কীটনাশকও ব্যবহার করা হয় না। শুধু সেক্স ফেরোমেন ব্যবহার করা হয়।

গাংনীর সাহারবাটি গ্রামের তারেক হোসেন বলেন, বেগুনগাছে টমেটো চাষের খবর পেয়ে এসেছি। পরামর্শও নিয়েছি। গ্রাফটিং পদ্ধতিতে এবার এক বিঘা জমিতে টমেটো আবাদ করব বলে ভাবছি। একই কথা জানান হাড়াভাঙ্গা গ্রামের মুঞ্জুরুল ইসলাম ও রাইপুর গ্রামের আব্দুল আলিম।

মেহেরপুর জেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। শুধু ফারুক হোসেন নয়, তার মতো আরও কৃষক যদি এই গ্রাফটিং পদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরু করেন, তাহলে একদিকে যেমন আশানুরূপ ফল পাবেন তেমনি কৃষিক্ষেত্রে ঘটবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামসুল আলম বলেন, ফারুকের বেগুনগাছে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো আবাদের জন্য আমরা সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়েছি এবং এখনও দিয়ে যাচ্ছি। মেহেরপুরের আবহাওয়া ও মাটি সবজি ও ফল আবাদের খুবই উপযোগী। গ্রাফটিং করে অনেক কিছু আবাদ করা যায়। স্থানীয় কৃষকরা দিন দিন নিত্য নতুন ফসল আবাদ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *