টিসিবির পণ্য নিয়ে যত অনিয়ম

Slider অর্থ ও বাণিজ্য


টিসিবির পণ্য বিক্রির ঠিকানায় ওষুধের দোকান। বরাদ্দের ভোগ্যপণ্য তোলা হলেও জানেন না ডিলার। আবার ভুয়া পরিচয়ে ভর্তুকির পণ্য হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঠিকানাহীন প্রতিষ্ঠানের নামে পণ্য বরাদ্দের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, অনিয়ম পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

৩ আগস্ট ২০২২। বুধবার সকাল পৌনে ৯টায় রাজধানীর পূর্ব তেজতুরী বাজারের চাঁদপুর এন্টারপ্রাইজে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু ডিলার বলছেন, এর কিছুই তিনি জানেন না।

চাঁদপুর এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. ছিডুমাল বলেন, ‘এ সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। আমার ভাই জানেন। আমি জানি সবশেষটি ঈদের আগে দেয়া হয়েছে।’
অথচ টিসিবির তথ্য বলছে, মঙ্গলবার (২ আগস্ট) ৪ লাখ ১৮ হাজার ৪৬০ টাকা মূল্যের ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও পেঁয়াজ বরাদ্দ পেয়েছেন এ ডিলার।

ছিডুর স্ত্রীর বড় ভাই শাহাদাত শেখ, যিনি এ বিক্রি কার্যক্রম পরিচালনা করেন, কিছুক্ষণ পর এসে তিনি জানালেন কেন বিক্রি কার্যক্রম শুরু করতে পারছেন না। যদিও বরাদ্দ ও বিক্রির পরিমাণ নিয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য জানা নেই তার।

একই দিন বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকায় রয়েছে আরিয়ান ইন্টারন্যাশনালের নাম। ঠিকানা ৭৪, পূর্ব তেজতুরী বাজার। কিন্তু সেখানে গিয়ে পাওয়া গেল একটি ওষুধের দোকান। ভবনের একজন মালিক ও স্থানীয়রা জানান, এ ঠিকানায় কখনোই আরিয়ান ইন্টারন্যাশনাল নামের কোনো প্রতিষ্ঠান ছিল না।

স্থানীয়রা জানান, এখানে এ নামের কোনো দোকান ছিল না। আগে এখানে একটি দর্জির দোকান ছিল।

এদিকে সরকারের ভর্তুকি দেয়া টিসিবির পণ্য বিক্রিতে সব ধরনের অনিয়ম বন্ধের দাবি সাধারণ মানুষের। তারা বলেন, আমরা চাই এখানে অনিয়ম যাতে না হয়। সরকার কঠোরভাবে এ বিক্রি কার্যক্রম তদারকি করে।

তবে মঙ্গলবার পণ্য বরাদ্দ পেয়ে ওই দিন বিকেল থেকেই বিক্রিতে ব্যস্ত দেখা গেল মেরাদিয়া বাজারের মেসার্স নাছিমা ট্রেডার্সকে। খুশির কথাও জানালেন কার্ডধারী ভোক্তারা।

তারা বলেন, এখন যেহেতু কার্ড আছে, সেহেতু দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরও এখন পণ্য পাওয়ার নিশ্চয়তা রয়েছে। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেশি থাকায় এখান থেকে পণ্য কিনলে আমাদের জন্য সাশ্রয় হয়।

ভর্তুকি মূল্যে সরকারি সংস্থা টিসিবির পণ্য বিক্রির লাইসেন্স দেয়ার ক্ষেত্রে কোথাও কোনো অনিয়ম বা ঠিকমতো পণ্য বিক্রি হচ্ছে কি না–এমন প্রশ্ন ছিল টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবিরের কাছে।

তিনি বলেন, ‘দোকান বরাদ্দের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলররা যদি আমাদের কাছে কোনো ধরনের অনিয়মের অভিযোগ দেন। অর্থাৎ ডিলাররা পণ্যটি নিয়ে যাওয়ার পর তো কাউন্সিলদের কাছে রিপোর্ট দেন যে আমি এত জনের জন্য এতটি পণ্যের বরাদ্দ নিয়েছি। এ বরাদ্দের বিষয়ে যদি কোনো অভিযোগ দেয়া হয়, তাহলে আমরা অবশ্যই সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

টিসিবি বলছে, ভর্তুকি মূল্যের পণ্য কেনার অধিকার যেমন রয়েছে, তেমনি অনিয়ম পেলে সেই তথ্য দিয়ে সংস্থাটিকে সহযোগিতা করার দায়িত্বও জনগণকে নিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *