এক ঘণ্টার লোডশেডিং দেখবে দেশবাসী

Slider জাতীয়


বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে আজ থেকে সারাদেশে এলাকাভিত্তিক এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং করা হবে। এছাড়া জ্বালানি তেলের লোকসান কমাতে বন্ধ করা হয়েছে ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র।

সোমবার (১৮ জুলাই) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক সমন্বয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, আগামী এক সপ্তাহ সারাদেশের সব এলাকায় বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত অন্তত এক ঘণ্টা লোডশেডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে সোমবার (১৮ জুলাই) বিকেলে তিনি বলেন, ‘এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণ করে পরের সপ্তাহে লোডশেডিং এর পরিমাণ বাড়ানো বা কমানো হবে। খরচ কমাতে ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রাখার ও সপ্তাহে একদিন পেট্রল পাম্প বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে জ্বালানি আমদানির খরচ ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমবে।’

জ্বালানি সাশ্রয়ে সপ্তাহে একদিন পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখা হবে বলেও জানানো হয়। রাত আটটার পর খোলা রাখা যাবে না দোকান ও শপিংমল।

এদিকে একইদিন বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, এই সংকট বেশিদিন থাকবে না।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ জ্বালানির আন্তর্জাতিক বাজারে যে অস্থিরতা তৈরি করেছে, তার আঁচ এবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে পোহাতে হচ্ছে দেশকে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রাথমিক জ্বালানির প্রাপ্যতা কমে যাওয়া এবং বিশ্ববাজারে অস্বাভাবিক দাম বাড়ার প্রেক্ষাপটে চলতি মাসের শুরু থেকেই হোঁচট খায় বিদ্যুৎ উৎপাদন। ভোগান্তি শুরু হয় লোডশেডিংয়ের।

চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার এই খাত সামাল দিতে কী করবে, তা নিয়ে গেল দুই সপ্তাহ ধরেই পর্যালোচনা করে আসছেন নীতিনির্ধারকরা। সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জ্বালানি উপদেষ্টা, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ডেকে নিয়ে বিশেষ সমন্বয় সভা করেন।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, আপাতত ডিজেল প্ল্যান্টগুলো থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধই রাখতে হবে। এতে ১ থেকে দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের যে ঘাটতি হবে সেটি পূরণ করা হবে এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে।

এছাড়া বৈঠকে সপ্তাহে একদিন পেট্রোল পাম্প বন্ধ, রাতটার আটটার পর শপিংমল খোলা না রাখার সিদ্ধান্ত কার্যকরে পদক্ষেপ নেয়া, সরকারি অফিসের কর্মঘণ্টা কমানো, বাসা-বাড়িতে এসি’র ব্যবহার সীমিত করাসহ বেশি কিছু সিদ্ধান্ত হয়।

বিকেলে সচিবালয়ে আবারও গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফ করেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। বিদ্যুৎ-জ্বালানির এই সংকটে শুধু বাংলাদেশ নয়, অন্যান্য দেশও একই পরিস্থিতিতে ভুগছে জানিয়ে তিনি বলেন, পরিস্থিতি খুব দীর্ঘায়ত হওয়ার শঙ্কা কম।

দেশে বর্তমানে ১৫২টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৫১ শতাংশ, তেলভিত্তিক এইচএফও ও এইচডিও চালিত প্ল্যান্টের উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৩৪ শতাংশ। বিদ্যুৎ বিভাগের আশা, উৎপাদন সক্ষমতা ২৫ হাজার হলেও সংকটের এই সময়ে দেশের চাহিদা থাকবে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার মেগাওয়াট।

কোন এলাকায় কখন লোডশেডিং হবে তার সম্ভাব্য তালিকা প্রকাশ করেছে ডিপিডিসি। ক্লিক করুন এখানে। ডেসকোর সূচি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *