ইতালির রাজনৈতিক ইতিহাসে ঘটনাবহুল একটি দিন ছিল বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই)। এদিন আস্থা ভোটে জেতার পরেও পদত্যাগের ঘোষণা দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি। তবে তার সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি প্রেসিডেন্ট সার্জিও মাতারেলা।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের খবরে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালেই আস্থা ভোটে জিতেছিলেন ইতালীয় প্রধানমন্ত্রী। তবে তার সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয় শরিক দল ফাইভ স্টার মুভমেন্ট। ফলে ক্ষমতাসীন জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতেই পদত্যাগের ঘোষণা দেন দ্রাঘি। তবে তার ঘোষণার কয়েক মিনিটের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট মাতারেলা জানিয়ে দেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করবেন না।
এদিন ইতালীয় প্রেসিডেন্ট একটি লিখিত বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে, দ্রাঘির পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছেন না প্রেসিডেন্ট। দ্রাঘি যেন পার্লামেন্টে গিয়ে একটি বিবৃতি দেন।
ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান মারিও দ্রাঘি গত ১০ বছরের মধ্যে ইতালির ষষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতাগ্রহণ করেছিলেন তিনি।
শরিক দল ফাইভ স্টার মুভমেন্টের মূল আপত্তি দ্রাঘির ২ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের প্যাকেজ নিয়ে। তাদের দাবি, এর কারণে বিদ্যুতের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে যাবে। এ কারণে ভোটাভুটি বয়কট করে তারা। এরপরও ১৭২-৩৯ ভোটে জয় পান দ্রাঘি। কিন্তু ফাইভ স্টার মুভমেন্ট ভবিষ্যতে সরকারের বিরোধিতা চালিয়ে গেলে এবং বিরুদ্ধে ভোট দিলে ইতালির রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।
ভোটাভুটির পর দ্রাঘি জানিয়েছেন, তিনি জাতীয় ঐক্য সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ফাইভ স্টার মুভমেন্ট সেই সরকারের শরিক। তাই তাদের ছাড়া তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকতে চান না।
তবে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র প্রেসিডেন্টের কাছে প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় সাময়িকভাবে হলেও ইতালির সংকট কাটলো। দ্রাঘিকে এখন পার্লামেন্টে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে কথ বলতে হবে। তিনি যদি এমপিদের বোঝাতে পারেন এবং আবার একটি আস্থা ভোটে জিততে পারেন, তাহলে সরকার চলবে।
সম্প্রতি দেশটির ঋণের বোঝা মারাত্মক জায়গায় পৌঁছেছে। তার ওপর এবার খরা হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিদ্যুৎ ও তেলের দাম বেড়েই চলেছে।