যশোরে চিকিৎসকের অবহেলায় বাংলাদেশের প্রথম নারী ওসির স্বামীর মৃত্যুর অভিযোগ

Slider খুলনা জাতীয় বাংলার মুখোমুখি


যশোর: যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের চিকিৎসকদের অবহেলায় নড়াইলের নড়াগাতি থানার ওসি রোকসানা খাতুনের স্বামী আহসানুল ইসলাম এর মৃত্যু অভিযোগ উঠেছে ।

বৃহস্পতিবার সকালে যশোর হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে তার মৃত্যু হয়। তবে চিকিৎসকদের দাবি, কার্ডিয়াক অ্যাটাকে মারা যাওয়া ওই রোগীর চিকিৎসায় কোনো অবহেলা করা হয়নি।

নড়াইলের নড়াগাতি থানার ওসি রোকসানা খাতুন জানান, বাংলাদেশ রেলওয়েতে বেনাপোলে পি ম্যান হিসেবে কর্মরত। তিনি যশোর কোতয়ালী থানার স্টাফ কোয়ার্টারে থাকেন। বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎ করে স্বামী আহসানুলের বুকে ব্যথা ওঠে, দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। কিছু সময়ের মধ্যে তিনি যশোর কোতয়ালী থানার ওসিকে ফোন দিয়ে তার স্বামীকে হাসপাতালে পাঠান। যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগ তাকে ভর্তি নিয়ে করোনারি কেয়ার ইউনিটের সিসিইউ ওয়ার্ডে পাঠায়। সেই সময় দায়িত্ব পালনকারী চিকিৎসক ওষুধ লিখে রোগীর পায়ের কাছে স্লিপ রেখে চলে যান। শ্বাসকষ্ট হলেও তাকে অক্সিজেন দেয়া হয়নি।

পরে ফোন দিলে তার স্বামী ফোন রিসিভ করেননি। পাশের বেডের রোগীর স্বজনরা ফোন ধরে চিকিৎসায় অবহেলার কথা জানান এবং বলেন, রোগীর অবস্থা খুব খারাপ। ওষুধ আনতে হবে। এ সময় পাশের বেডের রোগীর স্বজনদের তিনি ওষুধ কিনে আনতেও অনুরোধ করেন। পরে তিনি স্বামীর মৃত্যুর খবর পান। হাসপাতালের রেজিস্ট্রার অনুযায়ী সকাল ১০টার দিকে ওই রোগী মারা যান। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের থানাগুলোর মধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রথম এই নারী কর্মকর্তা অশ্রুশিক্ত হয়ে বলেন, ‘আমি এত লোকের সেবা করে বেড়াচ্ছি, অথচ শুধু ডাক্তারের অবহেলায় আমার স্বামী মারা গেল। আমার সন্তানরা এতিম হলো।’ পুলিশ এত সেবা দিচ্ছে অথচ পুলিশ পরিবার আজ সেবা পাচ্ছে না। বলেও অভিযোগ করেন তিনি ।

তবে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো তার স্বজনদের গাফিলতির দিকে আঙুল তুলছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দিলীপ কুমার রায় বলেন, ‘করোনারি কেয়ার ইউনিটে ভর্তির পর চিকিৎসক তাকে দেখে চিকিৎসাপত্র দেন। হাসপাতাল থেকে যা সরবরাহ করার, তা রোগীকে দেয়া হয়। কিন্তু বাইরে থেকে ওষুধ আনার দরকার ছিল। তবে রোগীর পাশে তার কোনো লোক না থাকায় সেটা আনা হয়নি। তাছাড়া রোগী মাত্র ১০ মিনিট সময় দিয়েছে। ফলে তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *