বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে: জি এম কাদের

Slider রাজনীতি

ঢাকা: জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার অনেক মিল আছে।

বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স গ্রহণ করে, পর্যটন থেকে আয় করে আবার গার্মেন্টস শিল্প থেকেও আয় করে দুটি দেশ। করোনা বা ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়নি। শ্রীলঙ্কায় প্রায় ১০ বছর গৃহযুদ্ধ চলেছে কিন্তু শ্রীলঙ্কা তখনও দেউলিয়া হয়নি। শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়েছে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে।
বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) বিকেলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় কাকরাইল মিলনায়তনে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে জি এম কাদের এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা যে বাজেট করছি তাও ঋণ নির্ভর। তাই পরিচালন ব্যয় কমাতে বলেছি সরকারকে কিন্তু কোনো উদ্যোগ নেই। আবার কারণে-অকারণে ফূর্তি করতে ব্যয় হচ্ছে হাজার কোটি টাকা।

জি এম কাদের বলেন, গত বছরও পুরো ট্যাক্স আদায় করতে পারেনি সরকার। কিন্তু এবার সাধারণ মানুষ ট্যাক্স দিতে না পারলে অবস্থা আরও খারাপ হবে। বিদেশি ঋণ নিয়ে বড় বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। যখন সুদসহ ঋণ পরিশোধ করতে হবে তখন দেশের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, যদি ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে কোনো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয় আর সেখান থেকে প্রতিদিন ১ কোটি টাকা হারে বছরে ৩৬৫ কোটি টাকা আয় হয় তাহলে শুধু আসল পরিশোধ করতে ৯০ বছর লেগে যাবে। আবার সুদের টাকাও পরিশোধ করতে হবে। সুদসহ ঋণ পরিশোধ করতে গিয়েই শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়ে গেছে। ঋণ নির্ভরতার কারণে দেশের ব্যাংকে টাকা নেই। পরিচালন ব্যয় না কমালে ব্যাংক থেকে ঋণ করে বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হবে। এ কারণেই দেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, মেগা প্রকল্পের নামে দেশে লুটপাট চলছে। প্রতিবছর দেশ থেকে হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। এতদিন সরকার টাকা পাচারের কথা স্বীকার করেনি। এখন ট্যাক্সের বিনিময়ে অবৈধ পন্থায় অর্জিত পাচার হওয়া হাজার কোটি টাকা বৈধ করার পন্থা বের করেছে সরকার। এমন নজির পৃথিবীর কোথাও নেই। ট্যাক্স দিলেই যদি অপরাধ মাফ হয়ে যায় তাহলে ভবিষ্যতে খুন-ডাকাতিও ট্যাক্সের মাধ্যমে বৈধতা পেতে পারে।

তিনি বলেন, পল্লীবন্ধুর নামে রাজনৈতিক হত্যার অপবাদ দেওয়া হয়। জীবিত অবস্থায় পল্লীবন্ধু এরশাদ নিহত নুর হোসেনসহ তার শাসনামলে সংগঠিত সব হত্যার তদন্ত ও বিচার চেয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কোনো হত্যার তদন্ত করেনি। নুর হোসেনসহ ওই সময়ের সব হত্যাকাণ্ডের তদন্ত হলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। মিথ্যাচারের রাজনীতি আর দেখতে চায় না দেশের মানুষ।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদার, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, ফকরুল ইমাম, সুনিল শুভ রায়, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, সফিকুল ইসলাম সেন্টু, অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, নাজমা আকতার, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা রওশন আরা মান্নান, জহিরুল আলম রুবেল, নাজনীন সুলতানা, ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান খান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *