টেস্টে ৬ ‘ডাক’ পাওয়ার রেকর্ডে বাংলাদেশই শীর্ষে

Slider খেলা

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সদ্য শেষ হওয়া দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে ৭ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। যেখানে অ্যান্টিগায় প্রথম ইনিংসে ১০৩ রানে অলআউট হওয়া সফরকারীদের ৬ ব্যাটার ‘ডাক’ পেয়েছেন। অর্থাৎ এদের সবাই শূন্য রানে মাঠ ছেড়েছেন। ক্রিকেটের ভাষায় শূন্য রানে আউট হলে তাকে ডাক বলে।

এর আগে ১৮৬৬ সালের ১৬ জুলাই ব্যাটিংয়ে নেমে কোনো এক ম্যাচে প্রিন্স অব ওয়েলস শূন্য রানে আউট হন। পরদিনে ব্রিটিশ একটি পত্রিকা শিরোনাম করেছিল, ‘প্রিন্স রয়্যাল রিটায়ার্ড টু দ্য রয়্যাল প্যাভিলিয়ন অন আ ডাকস এগ।’ অর্থাৎ হাঁসের ডিম নিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে এসেছেন প্রিন্স রয়্যাল। সেবার প্রথম ‘ডাক’ শব্দটি ক্রিকেটের অভিধানে আসে।

এখন প্রশ্ন উঠেছে অ্যান্টিগায় বাংলাদেশের ৬ ব্যাটার ডাক পাওয়ায় কি কোনো রেকর্ড হয়েছে ? ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোর ‘আসক্ স্টিভেন’ এপিসোডে এর উত্তর মিলেছে। যেখানে রেকর্ড হয়েছে ঠিকই, তবে টেস্ট ইতিহাসে এনিয়ে ৭ বার এমনটি ঘটেছে।

এই টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় শূন্য রানে ফেরেন। এরপর টপঅর্ডারের আরও দুই ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হকও ডাক পেয়ে মাঠ ছাড়েন। আর শেষদিকে নুরুল হাসান সোহান, মোস্তাফিজুর রহমান ও খালেদ আহমেদ শূন্য রানে বিদায় নেন।

টেস্টে ৭ বার কোনো ইনিংসে ৬ ব্যাটারের শূন্য রানে আউট হওয়ার রেকর্ডের তালিকাতেও বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি। এই ৭ বারের মধ্যে বাংলাদেশের নাম রয়েছে ৩ বার। রেকর্ডটির প্রথম মালিক অবশ্য পাকিস্তান। ১৯৮০ সালে করাচি টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ১২৮ রানে অলআউট হওয়া দলটির ৬ ব্যাটার শূন্য রানে ফেরেন। তবে মজার বিষয় এই ৭ টেস্টের মধ্যে এমন বিপদে পড়েও একমাত্র পাকিস্তানই ড্র করতে পেরেছিল। অন্য ৬ বার ক্ষতিগ্রস্ত দল হারে।

এক ইনিংসে ৬ ব্যাটার শূন্য রানে ফেরার দ্বিতীয় ঘটনাটি ১৯৯৬ সালের। সেবার আহমেদাবাদে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৫ রানে সবকটি উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই ইনিংসে দলটির ৬ ব্যাটার ডাক পান।

২০০২ সালে বাংলাদেশ প্রথমবার টেস্টের এক ইনিংসে ৬ ব্যাটারের শূন্য দেখে। ঢাকা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৮৭ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। পরের ঘটনাটি ২০১৪ সালে ম্যানচেস্টার টেস্টে। সেবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংস ১৫২ রানে অলআউট হওয়া ভারতের ৬ ব্যাটার শূন্য রানে আউট হন। আর ২০১৮ সালে দুবাই টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ড ৯০ রানে সবকটি উইকেটর হারায়। সেবারও ৬ ব্যাটার ছিলেন শূন্যের কোটায়।

৬ ব্যাটার এক ইনিংসে আউট হওয়ার সর্বশেষ দুটি নজির বাংলাদেশের। যেখানে অ্যান্টিগা টেস্টের সপ্তাহ তিনেক আগে মিরপুরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টাইগারদের ৬ ব্যাটার ডাক পান। যদিও সেই ইনিংসে মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ৩৬৫ রান করেছিল বাংলাদেশ। তবে টেস্টটি শেষ পর্যন্ত হারতে হয়।

এতো গেল টেস্ট, ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ৬ ব্যাটার এক ইনিংসে শূন্য করে বিদায় নিয়েছে এমন ঘটনা ৫ বার ঘটেছে। যার ৩ বারই আবার পাকিস্তান এবং টেস্টের মতো তারাই প্রথমবার এর শিকার। একবার করে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে। পাকিস্তান সর্বপ্রথম ১৯৮৭ সালে বার্মিংহামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ উইকেট হারিয়ে ২১৩ রান করার পথে ৬ ব্যাটার ডাক পেয়েছিলেন।

টি-টোয়েন্টিতে অবশ্য এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ডাক পাওয়ার রেকর্ড ক্রিকেটের কুলীন দল তুরস্কের। ২০১৯ সালে চেক প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষে মাত্র ২১ রানে অলআউট হওয়া দলটির ৮ ব্যাটারই শূন্য রানে ফেরেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *