বাড়ছে পানির স্রোত, ভয়াবহ পরিস্থিতিতে লাখ লাখ মানুষ

Slider জাতীয়


দেশে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ভারী বর্ষণ ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে সিলেট-সুনামগঞ্জের পর এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া, শেরপুর ও নেত্রকোনায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এসব জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। জনজীবনে নেমে এসেছে চরম ভোগান্তি।

এদিকে পানির স্রোত অসহায়ত্বের সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করেছে। ভেঙে যাচ্ছে কাঁচা ঘর-বাড়ি। পানির ওপর ভাসছেন মানুষ, ভাসছে প্রাণী। সীমাহীন দুর্ভোগে থাকা মানুষের পাশাপাশি কষ্ট বেড়েছে গৃহপালিত গবাদি পশুরও। যে যেভাবে পারছেন, গরু-ছাগলগুলোকে উঁচু জায়গাতে নেয়ার চেষ্টা করছেন।

এদিকে সিলেটে বন্যা ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। সুনামগঞ্জের সাথে বিচ্ছিন্ন সড়ক ও রেল যোগাযোগ। সিলেটের পুরাতন রেল স্টেশন ও কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা এখন পানির নিচে। মানবিক সংকটের এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সেনাবাহিনী।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারের বন্যা দেশের আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে। ভারত থেকে আসা ঢলে সিলেট বিভাগের ৮০ শতাংশ এলাকা এখন পানির নিচে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের ৯০ শতাংশ এলাকা ডুবে সোমবারের আগে এই পানি নামার সম্ভাবনা কম। কারণ উজানে আগামী দুই দিন ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে।

জানা গেছে, বন্যা পরিস্থিতির ভয়ঙ্কর অবনতি হওয়ায় দেশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে সিলেট ও সুনামগঞ্জ। অধিকাংশ এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। টেলিফোন নেটওয়ার্ক অকার্যকর হয়ে গেছে। বিদ্যুৎবিহীন রয়েছেন সিলেট ও সুনামগঞ্জের প্রায় ৩ লাখ মানুষ। অর্ধাহারে অনাহারে পানির সাথে যুদ্ধ করছেন সিলেট-সুনামগঞ্জের অন্তত ২০ লাখ মানুষ। খাদ্য সংকটের পাশাপশি রয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট।

এদিকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেট বিক্রয় ও বিতরণ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে জিও ব্যাগ ফেলে সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুতের গ্রিড উপকেন্দ্রে পানি প্রবেশ ঠেকাতে কাজ করছেন। তাদের সাথে সিলেট সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মীরা কাজ করছেন।

এছাড়াও দেশের উত্তরাঞ্চলের প্রধান নদী তিস্তা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি দ্রুত বাড়ছে। এরই মধ্যে তিস্তা অববাহিকার চারটি জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, রংপুরে বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হতে পারে বলে মনে করছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *