‘বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনো স্থিতিশীল নয়’

Slider রাজনীতি


৪৮ ঘণ্টা পার হলেও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনো স্থিতিশীল নয় বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ।
সোমবার (১৩ জুন ) সন্ধ্যায় মেডিকেল বোর্ডের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এমনটাই জানালেন তিনি।

ডা. জাহিদ আরও জানান, ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণের পর তার (খালেদা জিয়া) হার্টের বাকি দুটি বক্ল নিয়ে কাজ করা হবে।

এর আগে সকালে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনার জন্য বিকেলে মেডিকেল বোর্ড বসবে বলে জানান চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির।

শায়রুল কবির জানান, মেডিকেল বোর্ডে এভারকেয়ার হাসপাতালের ১২ জন চিকিৎসক আছেন। আর বাইরের চিকিৎসক আছেন ছয়জন। বোর্ডের নেতৃত্বে আছেন এভায়কেয়ারের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান ডা. শাহবুদ্দিন তালুকদার।

এর আগে বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত আরেক চিকিৎসক ডা. মামুন জানিয়েছিলেন, বিদেশে নেয়া ছাড়া চিকিৎসা সম্ভব নয়। বেগম খালেদা জিয়ার হার্টে এখনো দুটি ব্লক আছে। এ দুটি ব্লকের কারণে আবারও বেগম জিয়ার হার্টে রিং পরাতে হবে। আর সে জন্য তাকে দ্রুত বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানো প্রয়োজন।

গত শনিবার (১১ জুন) সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, খালেদা জিয়ার মাইল্ড হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। হৃদযন্ত্রের প্রধান আর্টারিতে ধরা পড়েছে ৯৯ শতাংশ ব্লক। রিং পরানো হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি বেগম জিয়াকে বিদেশে নিতে আবারও আহ্বান জানান।

একইদিন রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছিলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে হলে আদালতের মাধ্যমে যেতে হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বেগম জিয়া মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বিদেশে যেতে হলে তাকে আদালতের মাধ্যমে যেতে হবে।

গত শুক্রবার (১০ জুন) মধ্যরাতে হঠাৎ হৃদযন্ত্র ও শ্বাসযন্ত্রের জটিলতা শুরু হওয়ায় বেগম খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করা হয়। করোনারি কেয়ার ইউনিটে ভর্তির পর শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বৈঠকে বসে বেগম জিয়ার জন্য গঠিত ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড। বৈঠকে বেগম জিয়ার হৃদযন্ত্রের জটিলতার জন্য এনজিওগ্রামসহ বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।

২০২১ সালের এপ্রিলে কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর এ নিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ দফায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলো। গত ৬ এপ্রিল নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে একই হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। এর আগে চিকিৎসকরা বেগম জিয়ার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।

দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান বেগম খালেদা জিয়া। করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়া হয় তাকে। এরপর থেকে গুলশানের বাসায় থাকছেন ৭৬ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *