খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দাবিতে রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশ

Slider রাজনীতি


বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে এবং বিদেশে পাঠানোর পাশাপাশি তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়ক বন্ধ করে সমাবেশ করছে বিএনপি।

রোববার (১২ জুন) সকাল ১০টা থেকে বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর শাখা আয়োজিত পূর্বঘোষিত এ সমাবেশ শুরু হয়। যদিও সকাল ৯টা থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে আসতে থাকেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

একপর্যায়ে প্রেসক্লাবের সামনের এক পাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন অন্য পথ হয়ে চলাচল করছে। বিএনপির এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে সমাবেশস্থলের আশপাশে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এখন দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা বক্তৃতা করছেন। সমাবেশ থেকে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে তাকে দেশের বাইরে পাঠানোর দাবি জানাচ্ছেন দলটির নেতারা।

এদিকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়া ছাড়া চিকিৎসা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. মামুন। তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার হার্টে এখনো ২টি ব্লক আছে। এই দুটি ব্লকের কারণে আবারও বেগম জিয়ার হার্টে রিং পরাতে হবে। আর সে জন্য তাকে দ্রুত বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানো প্রয়োজন।’

এর আগে শনিবার (১১ জুন) সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, খালেদা জিয়ার মাইল্ড হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। তার হৃদ্‌যন্ত্রের প্রধান আর্টারিতে ধরা পড়েছে ৯৯ শতাংশ ব্লক। রিং পরানো হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি বেগম জিয়াকে বিদেশে নিতে আবারও আহ্বান জানান।

এদিনই রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে হলে আদালতের মাধ্যমে যেতে হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম জিয়া মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বিদেশে যেতে হলে তাকে আদালতের মাধ্যমে যেতে হবে।’

এর আগে শুক্রবার (১০ জুন) মধ্যরাতে হঠাৎ হৃদ্‌যন্ত্র ও শ্বাসযন্ত্রের জটিলতা শুরু হওয়ায় বেগম খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করা হয়। করোনারি কেয়ার ইউনিটে ভর্তির পর শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বৈঠকে বসে বেগম জিয়ার জন্য গঠিত ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড। বৈঠকে বেগম জিয়ার হৃদ্‌যন্ত্রের জটিলতার জন্য এনজিওগ্রামসহ বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।

২০২১ সালের এপ্রিলে কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর এ নিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ দফায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলো। গত ৬ এপ্রিল নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে একই হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। এর আগে চিকিৎসকরা বেগম জিয়ার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।

দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান বেগম খালেদা জিয়া। করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়া হয় তাকে। এরপর থেকে গুলশানের বাসায় থাকছেন ৭৬ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *