ঢাকা শহর রাত ৮টার পর বন্ধ থাকবে কেন

Slider জাতীয়

যানজট, দূষণ ও নির্মাণ কাজে বিপর্যস্ত ঢাকা শহরকে স্বস্তি দিতে উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। আগামী পহেলা জুলাই থেকেই রেস্তোরাঁ ও ওষুধের দোকানের মতো জরুরি বিষয়গুলো ছাড়া অন্য বাণিজ্যিক স্থাপনা রাত আটটার পর বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাত ৮টার পর দোকানপাট, শপিং মলসহ যেসব জায়গায় জরুরি সেবা দেয়া হয় না সেগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। এর ফলে রাত্রিকালীন যানজট ছাড়াও দূষণ কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ঢাকায় এক সময় রাত ৮টার পর দোকানপাট বন্ধ রাখার নিয়ম চালু ছিল। এখন শহরে রাত ১০টার পর অসংখ্য পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করে। এর ফলে শহরের প্রবেশপথগুলোতে তীব্র যানজট লেগে যায়। পাশাপাশি শব্দ ও বায়ুদূষণ অনেক বেড়ে যায়।

শুক্রবার (১০ জুন) ঢাকায় এক সেমিনারে মেয়র ফজলে নূর তাপস বলেছেন, শহরের ব্যবস্থাপনার জন্যও সময় দরকার। করোনার সময় ঢাকার পরিবেশ ও প্রকৃতি উজ্জ্বল হয়ে ওঠার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, তখন প্রকৃতি নব উদ্যোমে জেগে উঠেছিল।

তাপস বলেন, বিশ্বের সব শহরের একটি সময়সীমা আছে কিন্তু ঢাকার নেই। এ বিষয়য়ে সংশ্লিষ্ট অনেকের সঙ্গে আলোচনাও করেছেন তারা।

সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিভাগ থেকেও রাত ৮টায় দোকানপাট বন্ধ রাখার সংস্কৃতি চালুর অনুরোধ করা হয়েছিল। এখন সাধারণত ঢাকায় মধ্যরাত পর্যন্ত প্রায় সব ধরনের দোকানপাট খোলা রাখার প্রবণতা দেখা যায়। এর ফলে যানজট মধ্যরাত পর্যন্ত লেগে থাকে। দিন রাতের গড় তাপমাত্রারও তারতম্য ঘটে।

অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণার বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে মারাত্মক হারে তাপমাত্রা বাড়ছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে রাজধানী ঢাকাসহ পাঁচটি বড় শহর আগামী কয়েক বছরে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠবে। গত ২০ বছরে রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস। যেখানে সারা বিশ্বে তাপমাত্রা-বৃদ্ধিকে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার জন্য লড়াই চলছে।

শব্দ দূষণের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, মানুষের শব্দ গ্রহণের স্বাভাবিক মাত্রা ৪০ থেকে ৫০ ডেসিবল। অথচ পরিবেশ অধিদফতরের জরিপে দেখা যায়, দেশের বিভাগীয় শহরগুলোয় শব্দের মানমাত্রা ১৩০ ডেসিবল ছাড়িয়ে গেছে। শব্দ দূষণের ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে রাজধানীর পল্টন, শাহবাগ, ফার্মগেট, মতিঝিল, রামপুরাসহ কয়েকটি এলাকার নাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *