সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি: না ফেরার দেশে ফায়ার সার্ভিস কর্মী গাউসুলও

Slider জাতীয়


চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগার পর বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ ফায়ার সার্ভিস কর্মী গাউসুল আজম রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

রোববার (১২ জুন) ভোরে হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

গাউসুল আজমের স্বজনরা জানান, তার বাড়ি যশোরের মনিরামপুরে। বাবার নাম আজগর গাজী। চট্টগ্রামের কুমিরা ফায়ার স্টেশনে কর্মরত ছিলেন তিনি।

এর আগে শনিবার (১১ জুন) দুপুরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, এখন পর্যন্ত ১৯ জন রোগীই এখানে ভর্তি রয়েছে। এদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের আরেক কর্মী রবিন মিয়া (২২) ও কনটেইনার চালক নজরুল মণ্ডল (৩৮) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি আছেন। বাকিরা পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে আছে। বাকিদের অবস্থাও একেবারে আশঙ্কামুক্ত তা বলা যাচ্ছে না।

তিনি গাউসুল আজমের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছিলেন ওই সময়।

তিনি আরও বলেন, সব চিকিৎসক মিলে রোগীদের ওয়ার্ডে রাউন্ড ও মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকদের নিয়ে একটি মিটিং করা হয়েছে। সেখানে প্রত্যেক রোগীর পর্যালোচনা করা হয়েছে। তাদের চোখের সমস্যাগুলো আমরা দেখছি।

রোববার অধ্যাপক ডা. কাজী দ্বীন মোহাম্মদসহ জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক রোগীদের আবার এসে দেখবেন। এরপর সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নেব তাদের চিকিৎসায় পরবর্তী আর কি করা যায়।

তিনি বলেন, রোগীদের রক্ত লাগবে এটা জানার পর অনেকেই স্বেচ্ছায় রক্ত দিয়েছেন। এতে প্রচুর পরিমাণ রক্ত মজুত আছে। নতুন করে রক্ত রাখার জায়গাও নাই। আপাতত আমাদের আর রক্ত লাগছে না।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার (৪ জুন) রাত ৯টার দিকে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট একে একে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু ডিপোর কিছু কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থের কারণে দফায় দফায় বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠে এবং আগুনের তীব্রতা বাড়ে। পরে সেনাবাহিনীর একটি দলও ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিসকে আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ আজ ভোরে হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট আগুনে দগ্ধ হয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী গাউসুল আজম মারা গেলেন।

এর আগে বুধবার ভোরে আগুনে দগ্ধ হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন মাসুদ রানা নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ১০ জন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪ শতাধিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *