আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল এবং দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ অপ্রতিরোধ্য। ২০০৯ সালে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পর টানা তিন মেয়াদে দেশ পরিচালনা করছে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার। তৃতীয় মেয়াদে টানা ১৩ বছরে অর্থনীতির প্রায় সব সূচকে ঈর্ষণীয় সাফল্য এসেছে। নানামুখী উন্নয়নে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে রোল মডেল।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের চতুর্থ বাজেট।
বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের গত ১৩ বছরে বহু অর্জনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অর্জনসমূহ সদ্য ঘোষিত প্রস্তাবিত বাজেট অধিবেশনে উঠে আসে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকারের এ সাফল্যগাঁথাগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:
১) মহান জাতীয় সংসদ রাষ্ট্রীয় সব কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
২) গত ১৩ বছরে জিডিপির গড় প্রবৃদ্ধি ছিল ৬.৬ শতাংশ, যা ২০১৬-২০১৭, ২০১৭-২০১৮ ও ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৭ শতাংশের উপরে ছিল এবং ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৮ শতাংশ অতিক্রম করে। কোভিডকালীন সময়েও ২০২০-২০২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ঈর্ষণীয় ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ ছিল। ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা মেয়াদে অর্জিত গড় প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৩ শতাংশ এবং সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা মেয়াদে তা বেড়ে হয় ৭ দশমিক ৬ শতাংশ।
৩) অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০২১-২০২৫), প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-২০৪১) এবং বদ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ প্রণয়নপূর্বক বাস্তবায়ন কার্যক্রম গ্রহণ।
৪) জিডিপির আকার ৪ লাখ ৮২ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা থেকে ৩৯ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
৫) মাথাপিছু আয় ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে ৫৪৩ মার্কিন ডলার হতে বেড়ে বর্তমানে ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার।
৬) মূল্যস্ফীতি ৫ থেকে ৬ শতাংশের মধ্যে সীমিত আছে।
৭) দরিদ্র্যের হার ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ হতে কমে ২০ দমমিক ৫ শতাংশ এবং অতি দারিদ্র্যের হার কমে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৫ শতাংশে।
৮) বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছুঁয়েছে ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (২৩ আগস্ট, ২০২১)।
৯) বাজেটের আকার ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরের তুলনায় ১১ গুণের মতো বৃদ্ধি পেয়েছে।
১০) সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বরাদ্দ ২ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা থেকে বেড়ে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা হয়েছে।
১১) বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৪ হাজার ৯০০ মেগাওয়াট থেকে ২৫ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ কর্মসূচির আওতায় বর্তমানে দেশের শতভাগ জনগোষ্ঠী বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে।
১২) মিয়ানমার ও ভারতের সমুদ্রসীমা নিয়ে আইনি বিরোধের চূড়ান্ত নিষ্পত্তির মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের এলাকাভুক্ত সমুদ্রের অংশ, এক্সক্লুসিভ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও মহীসোপানসহ মোট ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার এলাকার ওপর স্বত্বাধিকার লাভ করে। সমুদ্রের নীল জলরাশি ও তার সম্পদ আহরণে এ উন্মুক্ত অধিকারের সুযোগ কাজে লাগাতে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১-এ সুনীল অর্থনীতির কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে।
১৩) নিম্নআয়ের দেশ থেকে গ্রাজুয়েশন; স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চূড়ান্ত ধাপ অতিক্রম।
১৪) রূপকল্প ২০২১-এ কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে খাদ্য ঘাটতি দূর করা এবং দেশকে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার যে প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছিল তা সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে এরইমধ্যে অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।
১৫) ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তব রূপ লাভ করেছে। ৪ হাজার ৫৫০টি ইউনিয়ন পরিষদে স্থাপন করা হয়েছে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার; গভীর সমুদ্রের তলদেশে অপটিক্যাল ফাইবার নির্মাণ, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট স্থাপন, মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু, উপজেলা শহরে ব্যাংকের এটিএম বুথ নির্মাণসহ সহজলভ্য ইন্টারনেট সেবা এখন মানুষের দোড়গোড়ায়।
১৬) বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ফলে ইন্টারনেট সেবা প্রদান সহজ হয়েছে। দেশে বর্তমানে প্রায় ১৭ কোটি মোবাইল ফোন ব্যবহার হচ্ছে।
১৭) জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন ঘোষণা (এমডিজি) সফলভাবে অর্জন।
১৮) এসডিজি বাস্তবায়ন অগ্রগতির স্বীকৃতিস্বরূপ এসডিজি প্রগ্রেস অ্যাওয়ার্ড লাভ।
১৯) মাতৃমৃত্যুর হার ২০০৫ সালের ৩৪৮ থেকে কমে এখন ১৬৫, পাঁচ বছরের নিচে শিশুমৃত্যুর হার ২০০৫ সালের ৬৮ থেকে কমে ২০১৯ সালে ২৮ এবং প্রসবকালে দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর উপস্থিতি ২০০৪ সালের ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০১৯ সালে ৫৯ শতাংশ হয়।
২০) বর্তমানে দেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ফাস্ট-ট্র্যাক প্রকল্প চলমান রয়েছে। পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, কর্ণফুলী টানেল ও ঢাকা বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ীর অদূরে কুতুবখালী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে অচিরেই চালু হবে। পায়রা সমুদ্রবন্দর, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ আরও কয়েকটি বড় প্রকল্প সমাপ্ত হলে দেশের অগ্রগতিতে নতুন মাত্রা যোগ হবে।
২১) ভারতের সঙ্গে স্থল সীমান্ত চুক্তির মাধ্যমে ছিটমহল বিনিময় করে বাংলাদেশ পায় ভারতের ১১১টি ছিটমহল। এ চুক্তির ফলে ৬৮ বছরের রাষ্ট্রহীন ছিটমহলের ৫১ হাজারেরও বেশি মানুষ বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার সুযোগ পায়।
২২) দেশ-বিদেশের অতিথিদের সরব উপস্থিতিতে সফলভাবে মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন।
২৩) সন্ত্রাস দমনে সরকার সাফল্য অর্জন করেছে। এক্ষেত্রে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যথাযথ উদ্যোগের ফলে দেশে নাশকতার হার অনেক কমে এসেছে।
২৪) ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ এগিয়ে চলছে পূর্ণোদ্যমে।
২৫) বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের অসমাপ্ত বিচারকাজ সম্পন্ন ও আদালতের রায় কার্যকর করা, মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ সম্পন্ন।
২৬) বঙ্গবন্ধু প্রবর্তিত বৈদেশিক নীতি—‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’— এ মূলমন্ত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অনুসরণ করেন।
২৭) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের হাল ধরেছেন বলেই সব অর্জন সম্ভব হয়েছে।