গাফুরব দিলোবার, নাজারব সাইদালি ও তালাবব শকির। ত্রিশোর্ধ্ব তিন বন্ধু। পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে সাইকেলে চড়ে রওনা হয়েছেন সৌদি আরবে। তাজিকিস্তান নিজ বাড়ি থেকে যাত্রা শুরু করেছেন তারা। বর্তমানে তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতে আছেন।
আধ্যাত্নিক এই যাত্রা কখনো ভুলবেন না বলে জানিয়েছেন তিন বন্ধু। বলেছেন, এই যাত্রার কথা কখনো ভুলব না। এটি একটি অবিস্মরণীয় যাত্রা! দুঃসাহসিকতা, উদারতা এবং আশায় ভরা একটি যাত্রা।
হজে যাওয়ার জন্য কেন এই কঠিন পথ বেছে নিয়েছেন তারা?
কারণ তাজিকিস্তান সরকার চলতি বছর ৪০ বছরের কম বয়সীদের হজে যাওয়ার ব্যাপারে বিধি নিষেধ আরোপ করেছেন, যাতে বয়স্করা হজে যাওয়ার সুযোগ পান, প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে।
তিন বন্ধুর একজন গাফুরব দিলোবার। বয়স ৩৭ বছর। তার দুই সন্তান রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই বন্ধু। আমরা সাইকেলে চড়ে হজে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বছরের শুরু থেকেই এই যাত্রার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা। এক মাস হলো যাত্রা করেছি। গরম আবহাওয়া, বালি, ধুলো ঝড় এবং প্রচণ্ড বাতাসের থেকে শুরু করে ফ্ল্যাট টায়ার, ভাষার প্রতিবন্ধকতা, রাস্তায় ঘুমানোসহ বেশ কয়েকটি সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু এই সব বাধা অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে গেছি আমরা। এখন যাত্রা চালিয়ে যাওয়ার জন্য দুবাইয়ে সৌদি আরবের কনস্যুলেট জেনারেলের কাছ থেকে ভিসা পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।’
এই দীর্ঘ যাত্রার ছোট ছোট মুহূর্ত তিনি তার ইন্সাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করছেন।
আরেক বন্ধু নাজারব সাইদালি। তার বয়স ৩১ বছর। তিন সন্তানের বাবা তিনি। যাত্রা সম্পর্কে বলেন, ‘এই দীর্ঘ যাত্রায় একটি দরজা বন্ধ হলে আরেকটি খুলে যেত। রুট বদলেছে। কিন্তু আমাদের যাত্রা থামেনি। হজ পালনের জন্য সৌদি আরবের ভিসা পাওয়ার আশায় আমরা এখান দুবাই এসেছি।’
তালাবব শকিরের বয়স ৩৪ বছর। তিনি একজন ব্যবসায়ী। চার সন্তান তার। তার মতে, ‘এটি একটি আধ্যাত্মিক জাগরণের যাত্রা। দিনের বেলায় প্রচণ্ড গরমে এবং শীতের রাতে গ্রাম ও পাহাড়ি এলাকায় ঘুরেছি আমরা। রাস্তার ধারে খেয়েছি। রাতে মসজিদের বাইরে ক্যাম্প করেছি। আমরা মানচিত্র, তাঁবু, কিছু হালকা খাবার ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে ভ্রমণ করেছি।’
পবিত্র রমজান মাসের শেষের দিকে সাইকেলে করে যাত্রা শুরু করেন তিন বন্ধু। অনেক ঝড়-ঝাপ্টা পাড়ি দিয়ে বর্তমানে তারা আরব আমিরাতে অবস্থান করছেন এবং কাকতালীয় ব্যাপার হচ্ছে, গতকাল ৩ জুন ছিল বিশ্ব বাইসাইকেল দিবস।