‘কবর থেকে উঠে আসার’ দাবি করা সেই বৃদ্ধ মহিলার পরিচয় পাওয়া গেছে। তার প্রকৃত নাম শেফালী সরদার। তাকে তার আশ্রয়দাতার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৩ মে) সকালে গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশ তাকে আশ্রয়দাতা সুফিয়া বেগমের কাছে হস্তান্তর করেন। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে শেফালী সরদার খুলনা জেলার দৌলতপুর থেকে পথ হারিয়ে গাইবান্ধায় আসেন।
বৃদ্ধাকে নিতে আসা নব্য মুসলিম সুফিয়া বেগম জানান, শেফালী সরদারের আত্মীয় স্বজন বলতে কেউ নেই। তার কোনো ঘরবাড়িও নেই। তিনি তার বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছিলেন। তার নামে প্রতিবন্ধীর কার্ডও দেয়া হয়েছে।
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি (তদন্ত) ওয়াহেদুল ইসলাম জানান, বৃদ্ধার খবর পেয়ে খুলনার দৌলতপুরের বাসিন্দা সুফিয়া বেগম শুক্রবার সকালে গাইবান্ধা থানায় আসেন। তিনি জানান, বৃদ্ধার নাম বাছিরন বেওয়া নয়। তার নামে বরাদ্দ হওয়া একটি প্রতিবন্ধী কার্ডও প্রদর্শন করেন।
ওসি আরও জানান, সত্যতা নিশ্চিত করার জন্য টেলিফোনে খুলনার দৌলতপুরে সুফিয়া বেগমের গ্রামের চেয়ারম্যান- মেম্বারদের কাছে খোঁজ খবর নেয়া হয়। পরিচয়ের সত্যতা পাওয়ায় সকাল ১০টায় শেফালী সরদারকে সুফিয়া বেগমের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (১১ মে) গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ৯ মাস আগে মারা যাওয়া বাছিরন বেওয়া নামে ৯২ বছরের এক বৃদ্ধা জীবিত অবস্থায় ফিরে এসেছেন বলে এলাকায় গুজব ছড়ানো হয়। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ওই বৃদ্ধার ফিরে আসার বিষয়টিকে গুজব হিসেবেই উল্লেখ করেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় সদরের ডেভিড কোং পাড়ার ওই বাড়িতে ভিড় করে উৎসুক জনতা।
স্বজনরা জানান, প্রায় ৯ মাস আগে ওই এলাকার আনিসুর রহমানের স্ত্রী বাছিরন বেওয়া মারা যান। পরে আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসী যথারীতি জানাজা শেষে গাইবান্ধা পৌর কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করেন। সম্প্রতি বাছিরন বেওয়াসদৃশ এক নারীকে গাইবান্ধা রেল স্টেশন চত্বরে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। এমন খবরে বাছিরন বেওয়ার মেয়ে মাজেদা বেগম ওই নারীকে তার বাড়িতে নিয়ে যান। এ সময় ওই নারীও নিজেকে বাছিরন বেওয়া দাবি করেন।
কিন্তু স্থানীয়রা জানান, মৃত ব্যক্তি কীভাবে ফিরে আসবে। এটা গুজব, বাছিরনের মতো দেখতে হলেও আসলে তিনি বাছিরন নন।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ওই নারীকে থানায় নিয়ে যায়।