৪ কোটি ২২ লাখ টিকা মজুত

Slider জাতীয়


করোনা প্রতিরোধে এখনো মানুষ প্রতিদিনই টিকা নিচ্ছেন। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ২৫ কোটি ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে। বর্তমানে দৈনিক ৩ লাখের মতো টিকা বিতরণ হচ্ছে। মোট জনসংখ্যার ৭৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণকারীর সংখ্যা ৬৮ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। বুস্টার নিয়েছেন ৬ শতাংশের বেশি। বর্তমানে ৪ কোটি ২২ লাখের মতো টিকা হাতে মজুত রয়েছে। করোনার টিকা পেতে মানুষের মধ্যে আগ্রহের কমতি নেই।

কিন্তু করোনার পরিস্থিতি দিন দিন উন্নত হচ্ছে। সর্বশেষ দেশে করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু শূন্য। একই সময়ে করোনায় নতুন শনাক্ত ২২ জনে দাঁড়িয়েছে। দেশের আট বিভাগের মধ্যে পাঁচ বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা রোগী শনাক্ত শূন্য। দৈনিক শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৩৮ শতাংশ। এদিকে, এখন পর্যন্ত দেশে মোট জনসংখ্যার ৭৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণকারীর সংখ্যা ৬৮ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ এবং বুস্টার ডোজ নিয়েছেন ৬ দশমিক ৪০ শতাংশ (বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএস’র সর্বশেষ তথ্যমতে দেশে মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯১ লাখ ১০ হাজার)। বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি দেশের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ লোককে দুই ডোজ টিকার আওতায় আনতে হবে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)-এর উপদেষ্টা এবং সংস্থাটির সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুস্তাক হোসেন এ ব্যাপারে বলেন, একটি দেশের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ লোককে ভ্যাকসিনের দুই ডোজের আওতায় আনতে হবে। বাংলাদেশে কিছু ভ্যাকসিন উদ্ধৃত থাকলে কোভ্যাক্সের মাধ্যমে যেসব দেশ পায়নি সেখানে পাঠাতে হবে। তিনি বলেন, আফ্রিকার অনেক দেশে এখনো ভ্যাকসিন পায়নি, সেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমে বিমানে দ্রুত পাঠাতে হবে টিকা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ১১ই এপ্রিল পর্যন্ত দেশে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ১২ কোটি ৮২ লাখ ৪৫ হাজার ৪৬৫ জন। অন্যদিকে দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ১১ কোটি ৫১ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৭ জন। আর বুস্টার ডোজ নিয়েছেন ১ কোটি ৮ লাখ ৩৫ হাজার ৬৯৪ জন। সবমিলিয়ে ২৫ কোটি ৪২ লাখ ২৭ হাজার ৮৩৬ ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে। এ মুহূর্তে ৪ কোটি ২২ লাখ ৬৫ হাজার ২৮৪ ডোজ বিভিন্ন টিকা হাতে মজুত রয়েছে। বর্তমানে দৈনিক প্রথম ডোজগ্রহণকারীর সংখ্যা সবচেয়ে কম। ৩৫ হাজারের কিছু বেশি এই ডোজ টিকা গ্রহণ করছেন। দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করছেন ১ লাখ ৪০ হাজারের মতো। বুস্টার ডোজ নিচ্ছেন ১ লাখ ৩০ হাজারের কাছাকাছি।
সরকারের সংগ্রহে ২৯ কোটি ৬৪ লাখ ৮৪ হাজার ১২০ করোনার টিকা: গত ৬ই এপ্রিল সরকারি দলের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিনামূল্যে কোভিড টিকা প্রদানের শুরু থেকে ৪ঠা এপ্রিল পর্যন্ত সরকার ২৯ কোটি ৬৪ লাখ ৮৪ হাজার ১২০ ডোজ টিকা সংগ্রহ করেছে। এ পর্যন্ত ১২ কোটি ৮০ লাখ ৭০ হাজার ৯৪৮ জনকে প্রথম ডোজ এবং ১১ কোটি ৪২ লাখ ৬৭ হাজার ৯৫৬ জনকে দ্বিতীয় ডোজসহ মোট ২৪ কোটি ২৩ লাখ ৩৮ হাজার ৯০৪ জনকে দুই ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ১ কোটি ৮১ হাজার ১৯৩ জনকে বুস্টার ডোজ দেয়া হয়েছে।
একই প্রশ্নের জবাবে সরকার প্রধান জানান, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করে বিশ্ববাজারে প্রচলিত দরের চেয়ে তুলনামূলকভাবে কম মূল্যে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে টিকা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। তবে টিকা কেনার ক্ষেত্রে নন-ডিকক্লোজার এগ্রিমেন্ট থাকায় টিকার মূল্য বা এ সংক্রান্ত ব্যয় প্রকাশ করা সমীচীন হবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন।
এদিকে করোনার টিকার প্রতিদিনের বিতরণের হিসাব পাওয়া গেলেও কী পরিমাণ টিকা নষ্ট হয়েছে তার তথ্য পাওয়া যায়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে। নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচিতে এখন প্রতিদিন প্রথম, দ্বিতীয় ডোজ এবং বুস্টার মিলে টিকা নিচ্ছেন আড়াই থেকে ৩ লাখের মতো। প্রসঙ্গত, দেশে করোনার টিকাদান উদ্বোধন হয় গত বছরের ২৭শে জানুয়ারি আর গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয় ওই বছরের ৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে। আর গ্রামের ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু হয় ৭ই আগস্ট থেকে। এরপর কয়েক দফায় টিকার বিশেষ ক্যাম্পেইনও হয়েছে দেশে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *