করোনা: বাংলাদেশ ভ্রমণে ফের সতর্কতা যুক্তরাষ্ট্রের

Slider সারাবিশ্ব


করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনা করে বাংলাদেশ ভ্রমণের বিষয়ে আবারও সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার (২৫ জুলাই) দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা বিষয়ক প্রধান সরকারি সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) ভ্রমণের গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশকে ‘উচ্চ ঝূকিপূর্ণ’ তালিকায় যুক্ত করে।

অবশ্য বাংলাদেশের পাশাপাশি এদিন আরও পাঁচটি দেশকে ‘উচ্চ ঝূকিপূর্ণ’ ক্যাটাগরিতে যুক্ত করে সতর্কতা জারি করে সংস্থাটি। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) সোমবার ভ্রমণের জন্য তার ‘উচ্চ ঝুঁকি’ বিভাগে ছয়টি দেশকে যুক্ত করেছে। বাংলাদেশ ছাড়াও মধ্য আমেরিকার দু’টি দেশও এই তালিকায় রয়েছে।

উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি ও ঝুঁকি বিবেচনায় সিডিসি দেশগুলোকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করেছে। এগুলো হলো- লেভেল ৩ (উচ্চ ঝুঁকি), লেভেল ২ এবং লেভেল ১। সিডিসির তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে লেভেল ৩ এর ক্যাটিাগরিতে অর্থাৎ উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশের কাতারে।

সিএনএন বলছে, সোমবার ভ্রমণের গন্তব্য হিসেবে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-র ‘উচ্চ ঝূকিপূর্ণ’ তালিকায় যুক্ত হওয়া ছয়টি দেশ হচ্ছে- বাংলাদেশ, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, পোল্যান্ড, ফিজি, এল সালভাদর এবং হন্ডুরাস।

অবশ্য করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি ও ঝুঁকি বিবেচনায় সিডিসি ইতোপূর্বে বিশ্বের দেশগুলোকে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করেছিল। এগুলো হলো- নিম্ম, মাঝারি, উচ্চ এবং অতি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। তবে ভ্রমণকারীদের জন্য কোভিড-১৯ মহামারির ঝুঁকি মূল্যায়নের জন্য সিডিসি নিজের রেটিং সিস্টেমকে সংশোধন করার পরে গত এপ্রিলে ঝুঁকি স্তরের দিক থেকে লেভেল ৩ শীর্ষস্থানে উঠে আসে।

সিএনএন বলছে, লেভেল ৩ ক্যাটাগরিতে এমন দেশগুলোকে যুক্ত করা হয় যেখানে গত ২৮ দিনে প্রতি ১ লাখ বাসিন্দার মধ্যে ১০০ জনেরও বেশি মানুষের ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া লেভেল ২ এবং লেভেল ১ যথাক্রমে ‘মধ্যম’ এবং ‘নিম্ন’ ঝুঁকি হিসাবে বিবেচিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার অর্থাৎ ২৫ জুলাই পর্যন্ত ভ্রমণের গন্তব্য হিসেবে লেভেল ৩ ক্যাটাগরিতে ১২০টিরও বেশি নাম রয়েছে। মোটামুটি সিডিসির তালিকায় থাকা ২৩৫টি গন্তব্যের প্রায় অর্ধেকই উচ্চ ঝুঁকির এই ক্যাটাগরিতে রয়েছে।

অবশ্য কেবল বাংলাদেশই নয়। ইউরোপের অনেক দেশও রয়েছে সিডিসির লেভেল ৩ ক্যাটাগরিতে। এর মধ্যে রয়েছে- ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রীস, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পর্তুগাল, স্পেন এবং যুক্তরাজ্য।

এমনকি ইউরোপের বাইরের আরও অনেক দেশ রয়েছে এই ক্যাটাগরিতে। যার মধ্যে রয়েছে- ব্রাজিল, কানাডা, কোস্টারিকা, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড এবং তুরস্ক।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০২১ সালের এপ্রিলে করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনা করে মার্কিন নাগরিকদের বাংলাদেশ সফরের বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি)।

সেসময় সিডিসির নির্দেশনায় বলা হয়, ‘বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে এমনকি সম্পূর্ণরূপে টিকা নেওয়া মানুষজনেরও করোনার নতুন ধরনে সংক্রমিত হওয়া ও তার বিস্তার ছড়ানোর ঝুঁকি বিবেচনায় বাংলাদেশে ভ্রমণ এড়িয়ে চলা উচিত।’

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছিল, ‘যদি কারও বাংলাদেশ সফর আবশ্যকীয় হয় তাহলে সফরের আগে তাকে অবশ্যই করোনা টিকার দুটি অর্থাৎ সম্পূর্ণ ডোজ নিতে হবে। সব ভ্রমণকারীকে অবশ্যই হাত ধুতে হবে এবং মাস্ক পরতে হবে। এড়িয়ে চলতে হবে জনসমাগম।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *