যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, তলিয়ে গেল ৮শ’ বিঘা জমির ধান

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি


সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে যাচ্ছে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের ফসল। গত কয়েকদিন যাবৎ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনাসহ অভ্যন্তরীণ নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে নদীর তীরবর্তী প্রায় ৮শ বিঘা নিম্নাঞ্চলের বোরো ধান ডুবে গেছে।

জেলার সদর, কাজীপুর, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলের জমির কাঁচা ও আধাপাকা ধান সবচেয়ে বেশি ডুবেছে। যমুনা, করতোয়া, বড়াল ও হুড়াসাগর নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সদরের কাওয়াকোলা, ছোনগাছা, সয়দাবাদ ইউনিয়ন, কাজিপুরের মুরসুরনগর, মেছরা, রতনকান্দি, নাটুয়াপাড়া ইউনিয়ন, শাহজাদপুরের কৈজুরি, সোনাতনী, গালা ও জালালপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের নিচু জমির কাঁচা ও আধাপাকা ধান সবচেয়ে বেশি ডুবে যাওয়ায় কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেকে পানি থেকে কাঁচা ধান কেটে গরুকে খাওয়াচ্ছেন। অনেকে আবার আধাপাকা ধান মাড়াই করে কিছুটা চাল বের করার চেষ্টা করছেন।

এছাড়া পানি বৃদ্ধির কারণে নদী তীরবর্তী তিল, বাদাম ও কাউন ডুবে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে সানাতনী গ্রামের জিয়া উদ্দিন বলেন, হঠাৎ নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে আমাদের এ এলাকার অন্তত ১১৫ বিঘা জমির ধান ডুবে গেছে। এ ধান দিয়ে আমরা বছরের অর্ধেক সময় খাদ্যের চাহিদা মিটিয়ে থাকি।
এ ধান ডুবে যাওয়ায় তারা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছি। কাঁচা ধান কেটে তারা গরুকে খাওয়াতে হচ্ছে। আমাদের মতো কৃষকের এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের সাহায্য সহযোগিতা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, হঠাৎ পানি বৃদ্ধির ফলে শাহজাদপুর উপজেলার প্রায় ২০০ বিঘা বোরো ধান ডুবে গেছে। এর মধ্যে ১১৫ বিঘা জমির ধান সম্পূর্ণ ও ৭৫ বিঘা জমির ধান আংশিক ডুবে গেছে। এতে কৃষকদের বেশ ক্ষতি হয়েছে।
কাজিপুরের নাটুয়াপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, অসময়ে নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে আমাদের এলাকার অন্তত ১০০ বিঘা জমির ধান ডুবে গেছে। ফলে অনেকেই কাঁচা ধান কেটে গরুকে খাওয়াচ্ছেন। এতে আমরা গরীব কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েছি।

এদিকে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) আব্দুল লতিফ জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে গত ১০-১২ দিন হলো যমুনায় পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আ জ ম আহসান শহিদ সরকার জানান, হঠাৎ যমুনায় পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার নদী বেষ্টিত চার উপজেলার প্রায় ৮০০ বিঘা কালো বোরো ধান ডুবে গেছে। এতে কৃষকদের বেশ ক্ষতি হয়েছে। তবে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখনো নিরূপণ করা যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *