সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার চন্দ্র সোনারথাল বেড়ি বাঁধ প্রকল্পের অধীনে থাকা ডুবাইল নামক ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে কৃষকের প্রায় তিন শ’ হেক্টর জমির আধাপাকা বোরো ধান তলিয়ে গেছে।
মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে ওই বাঁধটি ভেঙ্গে এলাকার হাজার হাজার কৃষকের বছরের একমাত্র ফসল তলিয়ে যায়। শত শত কৃষক দিনরাত উঁরা-কুদাল নিয়ে ওই বাঁধটি রক্ষা করার জন্য স্বেচ্ছাশ্রমে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারেননি।
এদিকে আগাম বন্যায় ছরের একমাত্র বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ায় হাওর এলাকার কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কৃষকের কান্না আর আহাজারিতে পুরো হাওর এলাকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।
কৃষকদের অভিযোগ, বাঁধ মেরামত কাজে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের গাফিলতি ও সীমাহীন দুর্নীতির কারণেই আগাম বন্যায় এভাবে বাঁধটি ভেঙ্গে গেছে।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় ৩১ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার বিকেলে ডুবাইল হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে এলাকার কৃষকের প্রায় তিন শ’ হেক্টর জমির আধাপাকা বোরো ধান তলিয়ে গেছে।
তবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ নাজমুল ইসলাম জানান, ডুবাইল হাওরে এবার দুই শ’ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ১৫ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছিল। হাওরের বাঁধ ভেঙ্গে বাকি ১৮৫ জমির বোরোধান তলিয়ে গেছে।
এ ঘটনার পর সন্ধ্যায় জেলা প্রশাক সরেজমিনে বাঁধ দেখতে ডুবাইল হাওরে অবস্থান করেন। এবং চন্দ্রসোনার থালে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধে মাটি কাটা, চাটাই, বাঁশ, বস্তা দিয়ে মেরামতের কাজ করছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মুনতাসির হাসান বলেন, পাহাড়ি ঢলের পানি উপজেলার সব কয়টি নদীতেই অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধগুলো ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাকি সব কয়টি বাঁধের মেরামত কাজ আমরা দিন-রাত মনিটরিং করে যাচ্ছি।
এদিকে জামালগঞ্জের কয়েকটি বাঁধ ফাটল দেখা দিলে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কৃষকরা স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন।