‘রাষ্ট্রহীন’ মোমেনকে আশ্রয় দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র!

Slider বিচিত্র

রাষ্ট্রহীন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় পেয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেছেন, ওই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র তাকে আশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি একটি বাড়ি দিয়েছিল। সঙ্গে চাকরিও। এ কারণে তিনি দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞ। সোমবার ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্থনি ব্লিনকেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ড. মোমেন ব্যক্তিগত বিষয়ের অবতারণা করে এই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তার ওই বক্তব্য প্রচারের পর নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। মন্ত্রী কবে, কেন রাষ্ট্রহীন ছিলেন এই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

দ্বিপক্ষীয় ওই বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেনের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী মোমেন বলেন, আমাকে সময় দেয়া এবং সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বৈঠকের সুযোগ দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
একই সঙ্গে আমি আপনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি- আমাদের ৬১ মিলিয়ন টিকা দেয়ার জন্য। একক দেশ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রই আমাদের সবচেয়ে বেশি টিকা দিয়েছে। আপনাদের এই অনুদানের কারণেই ভ্যাকসিন গ্রহণে বাংলাদেশ আজ শীর্ষস্থানে পৌঁছেছে। তাছাড়া সাম্প্রতিককালে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের প্রায় ৩১ মিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়েছে। মন্ত্রী বলেন, আমি আরেকটি কারণে আপনাকে ধন্যবাদ জানতে চাই যে, আপনারা মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর ওপর চালানো বর্মী গণহত্যার স্বীকৃতি দিয়েছেন, এ কাজে আপনার অবদানে আমরা অত্যন্ত খুশি। আশা করি নির্যাতিতরা এতে কিছুটা হলেও প্রশান্তি পাবে এবং বাস্তুচ্যুতের প্রত্যাবাসনের পথ সুগম হবে। মন্ত্রী মোমেন বলেন, আমি খুব খুশি যে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পক্ষ থেকে আমরা একটি দুর্দান্ত চিঠি পেয়েছি। আগামীর দিকনির্দেশনা রয়েছে এতে। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের অসাধারণ অনেক অর্জন রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের অনেক খারাপ সময় গেছে, ভালো সময়ও গেছে। ভালো-মন্দ সব সময় আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বন্ধু হিসেবে পাশে পেয়েছি। এখন আমরা আমাদের সম্পর্কের আরও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য উন্মুখ হয়ে আছি। সে কারণেই আজ আমি এখানে এসেছি। মন্ত্রী মোমেন বলেন, আমি এটাও বলতে চাই যে গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ সত্যিই অনেক অগ্রগতি সাধন করেছে, আমাদের অর্জন অনেক। আমরা তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে পরিচিত ছিলাম কিন্তু আজ বাংলাদেশ একটি প্রাণবন্ত অর্থনীতি এবং বিপুল সম্ভাবনার দেশে পরিণত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের এই উত্তরণে মহান অংশীদার। বছরের পর বছর ধরে আপনারা আমাদের সমর্থন জুগিয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার এবং বড় বিনিয়োগকারী আখ্যা দিয়ে মন্ত্রী মোমেন বলেন, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ জ্বালানি খাতে। কিন্তু আমি মনে করি এখন আমাদের জ্বালানির বাইরে তাকানোর সময় এসেছে। অন্যান্য সম্ভাবনার খাতে মার্কিন বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা আরও উন্নত অর্থাৎ রক-সলিড রিলেশন গড়তে চাই, আমি ব্যক্তিগতভাবেও সেই দিনের অপেক্ষায়। জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য সময় যুক্তরাষ্ট্রে কাটানোর সুযোগের জন্য মার্কিন নেতৃত্বের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে গিয়ে মোমেন বলেন, আমি সব সময় আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। কারণ আমি যখন গৃহহীন, বেকার এবং রাষ্ট্রহীন ছিলাম, তখন যুক্তরাষ্ট্রই আমাকে একটি বাড়ি ও চাকরি দিয়েছে। এ জন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কৃতজ্ঞ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *