সাগর-রুনি হত্যা : আসামিদের বিচারের আওতায় আনতে হাইকোর্টের রুল শুনানিতে উঠছে

Slider বাংলার আদালত


২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি নির্মমভাবে খুন হন। এই সাংবাদিক দম্পতি খুনের ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও মামলার চূড়ান্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি। এখনো তদন্ত পর্যায়ে রয়ে গেছে মামলাটি।

তবে এ ঘটনায় ২০১২ সালে করা একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আসামিদের শনাক্ত করতে হাইকোর্টের জারি করা রুল শুনানিতে উঠছে। আজ সোমবার রিট আবেদনটি কার্যতালিকায় আসার পর বিচারপতি মো: মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল শুনানির জন্য তারিখ নির্ধারণ করেন।

আদালতে রিট আবেদেনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরেসদ।
এ বিষয়ে মনজিল মোরসেদ জানান, সাগর-রুনি মামলার তদন্ত সঠিকভাবে করা এবং আসামিদের আইনের আওতায় আনার জন্য ২০১২ সালে আমরা একটি রিট দায়ের করেছিলাম। সেই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেছিল। রুলে সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত করে আসামিদের আইনের আওতায় আনার জন্য কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে আদালত। এরপর আমাদের পৃথক একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলার তদন্ত র‌্যাবের কাছে চলে যায়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এই ১০ বছরে এ মামলার চূড়ান্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি। এখনো এটি তদন্ত পর্যায়ে রয়ে গেছে। ১০ বছর আগে জারি করা রুলের শুনানির জন্য আমরা কোর্টে আবেদন করেছিলাম। আদালত রুল শুনানির জন্য তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আগামীকাল মঙ্গলবার মামলাটি তালিকায় আসলে শুনানি হবে।

তিনি বলেন, আমরা চাচ্ছি তদন্ত যেন তাড়িাতাড়ি শেষ করে প্রকৃত আসামিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা যায়।
২০১২ সালে হত্যাকাণ্ডের পর তদন্ত ও আসামি গ্রেফতার নিয়ে জনস্বার্থে রিট করে হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ। সেই রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। ২৮ ফেব্রুয়ারি জারি করা রুলে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের খুনিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি তাদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি রুনির ভাই নওশের আলী রোমান বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা মামলা করেন।
প্রথমে মামলার তদন্ত করেন শেরেবাংলা নগর থানার এক কর্মকর্তা। ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তভার পড়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক মো: রবিউল আলমের ওপর। দুই মাস পর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‌্যাব)। সেই থেকে প্রায় ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি সংস্থাটি।

সবশেষে গত ২৭ মার্চ এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু নির্ধা‌রিত দিনে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি র‌্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা। তাই ঢাকার মেট্রোপ‌লিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারী আগামি ২৬ এপ্রিল প্রতিবেদন দাখিলের নতুন দিন ধার্য করেন। এ নিয়ে প্রতিবেদন দাখিলের তা‌রিখ ৮৭ বার পেছালো।

এ মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট আসামি ৮ জন। অপর আসামিরা হলেন – বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুন, পলাশ রুদ্র পাল, তানভীর ও আবু সাঈদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *