পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, এইসব ষড়যন্ত্রের কাছে তিনি নতি স্বীকার করবেন না। খবর পার্সটুডের
পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট বা পাকিস্তান গণতান্ত্রিক আন্দোলন নামক জোট ইমরান খানের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচন দাবি করছে। তারা বলছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে কারচুপি হয়েছিল এবং ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ সেনাবাহিনীর সহায়তায় ক্ষমতা অর্জন করে। ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে মুসলিম লীগ-নাওয়াজ, পিপলস পার্টি ও জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম দলসহ ১১টি বিরোধী দল নিয়ে গঠন করা হয় পাকিস্তান গণতান্ত্রিক আন্দোলন নামক জোট।
সম্প্রতি এই জোট ইমরান খানের পদত্যাগের দাবিতে সারা দেশ থেকে ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চের আয়োজন করে। এই জোট পাকিস্তান সরকারের বিষয়ে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর হস্তক্ষেপেরও অবসান চাইছে। পাকিস্তানের সরকারবিরোধী দলগুলো ইমরান খানের পদত্যাগের ব্যাপারে তার প্রতি আল্টিমেটাম বা সময়সীমাও ঘোষণা করেছে।
বলা হচ্ছে, ইমরান খানের সরকারের প্রতি পাক সেনাবাহিনীর পরিপূর্ণ সমর্থন ছিল। কিন্তু ইমরানকে ক্ষমতায় ধরে রাখার বিষয়ে পাক সেনাবাহিনীর দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেছে। আর এই সুযোগই ইমরানকে পদচ্যুত করার আন্দোলন জোরদারে ভূমিকা রাখছে বলে মনে করা হচ্ছে।
পাকিস্তানে কোনো রাজনৈতিক আন্দোলনই সেনাবাহিনীর সহায়তা ছাড়া সফল হয়নি। এ অবস্থায় পাকিস্তানে রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের চেষ্টা জোরদারের বিষয়টি দেশটির সামগ্রিক রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করেছে।
ইমরান বলছেন, তার দেশের ঘরোয়া ও পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে স্বাধীন চিন্তা-চেতনার কারণেই দেশি-বিদেশি চক্রান্তে তার সরকারের পতন ঘটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
পাকিস্তানের কোনো প্রধানমন্ত্রী কখনও ক্ষমতার মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিরোধের কারণে ইমরানকেও একই ভাগ্য বরণ করতে হতে পারে বলে পাক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। ক্ষমতায় টিকে থাকতে হলে ইমরানকে পাক সেনাবাহিনীর সঙ্গে আপোষ করতে হবে।
পাকিস্তানের প্রধান বিরোধী দল বা বড় বড় দলগুলো একে অপরের বিরোধিতায় অভ্যস্ত হলেও ইমরানের সরকারের বিরুদ্ধে এইসব দল একজোট হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়েছে।
ইমরানও তার বিপুল সংখ্যক সমর্থককে রাজপথ ও জনসভায় ডেকে এনে শক্তি-প্রদর্শন শুরু করেছেন। পাকিস্তানের সংসদে তার বিরুদ্ধে যে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের আয়োজন করা হচ্ছে সেখানে ভোটাভুটিতে ইমরান বিজয়ী হবেন বলে দৃঢ় আশাবাদী। বিরোধী দলগুলো ইমরানের দলের সাংসদদের কতটা বাগে আনতে পারবেন তার ওপরই নির্ভর করছে আপাতত ইমরানের ক্ষমতার স্থায়িত্ব।