রাজধানীতে সিনিয়র নার্সের রহস্যজনক মৃত্যু

Slider নারী ও শিশু

রাজধানীর মিরপুরে জুলিয়েট মণ্ডল (২২) নামে একজন সিনিয়র নার্সের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) দুপুরে মিরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হোসনে আরা সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাজধানীতে সিনিয়র নার্সের রহস্যজনক মৃত্যু ।

জুলিয়েট শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে চাকরি করতেন। তিনি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার নলচিরা গ্রামের সুবল মণ্ডল ও জোসনা মণ্ডলের মেয়ে।

এসআই হোসনে আরা বলেন, বুধবার (১৬ মার্চ) সকালে মেয়েটি গলায় ফাঁস দেন বলে জানা গেছে। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মিরপুরের হার্ড ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। সংবাদ পেয়ে সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ওই হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। পরে মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করায়, সেখানে ময়নাতদন্ত না করিয়ে ওইদিন দিবাগত রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। মৃতের গলায় কালো দাগ ছিল এবং পিঠের ডান পাশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, জুলিয়েট পারিবারিক কলহে আত্মহত্যা করতে পারেন। এ ছাড়া অন্য কারণ থাকলে তা তদন্ত সাপেক্ষে ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে।

এদিকে জুলিয়েটের বাবা সুবল মণ্ডল জানিয়েছেন, দু’বছর আগে ১৩ মার্চ গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া উপজেলার রামশীল গ্রামের নিক্সন তালুকদারের সঙ্গে তার মেয়ের বিয়ে হয়। এরপর মিরপুরের আহমদ নগর পাইকপাড়া এলাকায় স্বামী-শাশুড়ির সঙ্গে থাকতেন। তার স্বামী আইটির কাজ করেন।

জুলিয়েটের ছোট বোন স্নিদ্ধি মণি মণ্ডল জানান, নিক্সনের পরিবার জুলিয়েটকে ছোট করে দেখতো, বিভিন্নভাবে অপমান করতো। ২০২১-এর ডিসেম্বরে তার বোন সরকারি সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে নিয়োগ পান। পরে একসঙ্গে তিন মাসের বেতন দেড় লাখ টাকা পান। আর ওই টাকা না দেওয়ায় বিভিন্ন অজুহাতে জুলিয়েটের প্রতি অমানুষিক নির্যাতন চালান তার স্বামী-শাশুড়িসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা।

তিনি বলেন, আমাদের পরিবার সচ্ছল না। চার বোনের মধ্যে আপু ছিল বড়। সে খুবই ধৈর্যশীল, সে আত্মহত্যা করতে পারে না। তারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে, আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছে।

মৃতের বাবা ও অন্য স্বজনরা ঢামেক মর্গে অভিযোগ করে বলেন, জুলিয়েটের মৃত্যুর জন্য তার স্বামী ও স্বামীর পরিবারের সদস্যরা জড়িত। আমরা তাদের বিচার চাই।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢামেক হাসপাতালে জুলিয়েটর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। তাকে শেষবারের মতো দেখতে সহকর্মী ও স্বজনরা মর্গে ভিড় জমান। ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনরা মরদেহ নিয়ে যান।

এদিকে, মৃতের ননদ নূপুর ব্যানার্জি বলেন, জুলিয়েট খুব রাগী প্রকৃতির ছিল। পারিবারিক সামান্য বিষয় নিয়েই দ্বন্দ্ব লেগে যেতো। গতকাল সকালে সবার অগোচরে দরজা বন্ধ করে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয় সে। পরে দরজা ভেঙে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে মিরপুর ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *