ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আটকে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’তে রকেট হামলায় নিহত নৌ প্রকৌশলী হাদিসুর রহমানের লাশ দেশে এসে পৌঁছেছে। গতকাল দুপুর ১২টা ৬ মিনিটে তুর্কি এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে হাদিসুরের লাশ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। হাদিসুরের ছোট ভাই গোলাম মাওলা লাশ গ্রহণ করেন। পরে অ্যাম্বুলেন্সে তার গ্রামের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার উদ্দেশে রওনা হন তার স্বজনরা। গতকাল মধ্যরাতে তার লাশ বাড়িতে পৌঁছানোর কথা। নিহত হাদিসুরের চাচা ও বেতাগী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান বলেন, আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জানাজা হবে। জানাজা শেষে মসজিদের পাশে তার দাদা-দাদির কবরের পাশেই দাফন করা হবে।
অন্যদিকে, ছেলের লাশ দেশে আসার খবরে মা-বাবার আহাজারিতে হাদিসুরের গ্রামের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। হাদিসুরের মেজ ভাই তারিকুল ইসলাম বিলাপ করে বলেন, এবার যাওয়ার সময় আমি আমার ভাইকে আগায় দিয়ে আসছিলাম। কিন্তু আমি আর আমার ভাইকে আনতে পারলাম না। মাকসুদুর রহমান বলেন, হাদিসুর ২০১৪ সালে সিঙ্গাপুরের একটি জাহাজে নৌ প্রকৌশলী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০১৮ সালে এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে হাদিসুর যোগ দেন। হাদিসুর রহমান বিনয়ী প্রকৃতির লোক ছিলেন। তার মৃত্যুতে পুরো গ্রাম এখন শোকাহত।
স্বজনরা জানান, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর অলভিয়া বন্দরে আটকে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধি। সেখানে নোঙর করা অবস্থায় ২ মার্চ বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে হামলায় নিহত হন হাদিসুর রহমান। এরপর বন্দরের আশপাশ এলাকায় বসবাসকারী বাংলাদেশের নাগরিকদের সহায়তায় ৩ মার্চ জাহাজে থাকা ২৮ নাবিককে উদ্ধার করে তাদের ইউক্রেনের বাংকারে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ৯ মার্চ ২৮ নাবিককে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। জাহাজটির ২৯ জন নাবিক ও প্রকৌশলীর মধ্যে ২৮ জন নিরাপদে দেশে ফিরলেও হাদিসুরকে ফিরতে হয়েছে লাশ হয়ে।