ঢাকা: ভারতের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় আর নেই। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ৯০ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
গত ২৬ জানুয়ারি রাতে শৌচাগারে পড়ে গিয়ে আঘাত পান সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। এরপর বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। একইসঙ্গে ছিল শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাও। তার দুটি ফুসফুসেই সংক্রমণ দেখা দেয় বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র।
ওই দিনই তাকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এর দুই দিন আগে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সম্মাননা পদ্মশ্রী সম্মান প্রত্যাখ্যান করেছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।
তার কণ্ঠের জাদুতে মুগ্ধ হয়েছে কয়েক প্রজন্ম। ৫০ বছরেরও বেশি সময় নানা ভাষার সিনেমায় প্লেব্যাক করেছেন তিনি। সিনেমার গানের পাশাপাশি বাংলা আধুনিক গান ও ধ্রুপদী সঙ্গীতেও তিনি ছিলেন সমান পারদর্শী। হেমন্ত মুখার্জি-সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় গানের জুটি হিসেবে দারুণ জনপ্রিয় ছিল এক সময়।
১৯৭১ সালে ‘জয় জয়ন্তী’ ও ‘নিশিপদ্ম’ ছবিতে গান গেয়ে শ্রেষ্ঠ গায়িকা হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। ২০১১ সালে ভারত সরকার তাকে ‘বঙ্গবিভূষণ’ উপাধিতে সম্মানিত করে। আর ২০২২ সালে পদ্মশ্রী সম্মান প্রত্যাখ্যান করেন তিনি।
১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবর দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন সন্ধ্যা। তার সঙ্গীত শিক্ষার মূল কাণ্ডারি ছিলেন তার দাদা রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁর শিষ্য ছিলেন সন্ধ্যা।
১৯৪৫ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে প্রথম গান রেকর্ড করেন তিনি। কলম্বিয়া থেকে তার প্রথম রেকর্ড করা গান গিরীন চক্রবর্তীর কথায় ও সুরে ‘তুমি ফিরায়ে দিয়াছ’ ও ‘তোমার আকাশে ঝিলমিল করে’।
১৯৪৮ সালে প্রথমবার রাইচাঁদ বড়ালের সঙ্গীত পরিচালনায় প্লেব্যাক করেন, ছবির নাম ‘অঞ্জনগড়’। ওই একই বছরে আরও তিনটি আধুনিক গান রেকর্ড করে সঙ্গীতজগতে নিজের জায়গা পাকা করে ফেলেন সন্ধ্যা।
১৯৫০ সালে মুম্বাই পাড়ি জমান বাংলা মৌলিক আধুনিক গানের সম্রাজ্ঞী সন্ধ্যা। ১৭টি হিন্দি ছবিতে প্লেব্যাক করেন তিনি। শচীন দেববর্মনের হাত ধরেই শুরু হয়েছিল তার মুম্বাই সফর। শচীন দেববর্মন নিয়ে গেলেও মুম্বাইয়ে প্রথম প্লেব্যাকের সুযোগ হল অনিল বিশ্বাসের সুরে ‘তারানা’ ছবিতে।