গ্রাম বাংলা ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ভোগ-বিলাসে লিপ্ত নয় এবং নিজেদের আখের গোছাতে ক্ষমতায় আসেনি। জনগণের সেবা করার জন্য ক্ষমতায় এসেছে। এজন্য দেশের উন্নয়ন হচ্ছে, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, যারা ত্যাগ স্বীকার করে, তাদের হাতে যখন ক্ষমতা আসে তখন দেশের উন্নয়ন ঘটে। যারা উড়ে এসে ক্ষমতায় জুড়ে বসে, তারাই ভোগ-বিলাস ও লুটপাটে লিপ্ত থাকে। তাদের কাছে দেশ নিরাপদ নয় এবং তাদের সময়ে দেশের উন্নয়ন হতে পারে না।
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আজ বাজেট বক্তৃতায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, জনগণের সেবা করার জন্য ক্ষমতা হলো একটি সুযোগ। সেই সুযোগ জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্যই তার সরকার দায়িত্ব মনে করে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, তার সরকারের দেশপ্রেম ও মানুষের জন্য ভালোবাসা আছে বলেই তারা দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে পারছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে আগামীতেও তারা একই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিন্তু দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রকে ব্যাহত করতে বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠী ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বানচালের জন্য নানা সহিংস কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। সে সময় তারা আগুনে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে, এমনকি অবলা গরুও তাদের হাত থেকে রা পায়নি। তারা যানবাহনে আগুন, ট্রেন পুড়িয়ে দেয়া, অফিস-আদালতে আগুন দিয়ে দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেশকে অন্ধকারে নিয়ে যেতে চেয়েছিল।
তিনি বলেন, বিগত সংসদে এমনকি ৯৬ সালের সংসদেও বিএনপির সংসদ সদস্যদের আচরণ ছিল অশোভনীয়। তাদের অশালীন বক্তব্য, ফাইল ছোড়াছুড়ি, সংসদের চেয়ার ও মাইক ভাঙ্গা দেখে মনে হয়েছে সংসদ যেন তাদের কাছে খিস্তিখেওড়ের জায়গা। সে সময় তারা বিটিভির কেমেরাম্যানকেও মারধর করেছে। দেশের অগ্রগতিতে বাধা দেয়ার জন্যই তারা সংসদে এসব অশোভন আচরণ করেছে।
বর্তমান বিরোধী দলের প্রশংসা করে তিনি বলেন, এখন দেশের জনগণ, যুব সমাজ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দেখতে পাচ্ছে কিভাবে গণতন্ত্র চর্চা করতে হয়। বর্তমান বিরোধী দল বিরোধিতার খাতিরেই বিরোধিতা না করে সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করছে। সংসদ কেমন হওয়া উচিত, তা এখন দেশবাসী বুঝতে পারছে। শেখ হাসিনা বলেন, একটি বছরে কিভাবে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি করতে হয়, সে বিষয়টি বাজেটে উঠে আসে। তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আওয়ামী লীগের একটি লিখিত দলিল রয়েছে। অনেক আলোচনা ও সেমিনারের মাধ্যমে এই দলিল তৈরি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সেই দলিল মোতাবেকই নির্বাচনী ইশতেহার ও প্রতিবছরের বাজেট প্রণয়ন করে থাকে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দেশের উন্নয়নের জন্য প্রেতি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। সেই মোতাবেক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সরকার চালিয়ে যাচ্ছে। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর বাজেটের আকার তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়ে এবার ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, আগে বাজেট আসলেই দেখা যেতো, দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেছে। এই নিয়ে মিছিল-মিটিং হতেও দেখা গেছে। কিন্তু ২০০৯ সাল থেকে বাজেট ঘোষণার আগে বা পরে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রয়েছে। দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে বাস্তবমুখী বাজেট হচ্ছে বলেই আগের এই ধারাটি এমনকি বাজেট নিয়ে কারো সমালোচনাও খুব একটা দেখা যায় না।
শেখ হাসিনা বলেন, আসলে জনগণের কল্যাণের জন্যই তার দল রাজনীতি করে বলেই বাজেটও হয় জনকল্যাণমুখী। তিনি বলেন, তবে কিছু লোক থাকে সমালোচনা করার জন্যই। আর সে সুযোগটি অবশ্য বেসরকারি টিভি চ্যানেলের অনুমতি দিয়ে বর্তমান সরকারই করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, এতে এখন এক শ্রেণীর লোক মধ্যরাতে এসব চ্যানেলে বাজেট উচ্চাবিলাসী, বাস্তবায়নযোগ্য নয়, মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে, ঘাটতি বেশি, এত টাকা আসবে কোত্থেকে ইত্যাদি প্রশ্ন তুলে বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে টক শোতে বলে বেড়াচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিন্তু তার সরকারের দূরদর্শিতার কারণেই দেশের মাথাপিছু আয় ১১৯০ ডলারে উন্নীত, রিজার্ভের পরিমাণ ২১ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পাওয়া, রফতানি আয় বৃদ্ধি পেয়ে ২৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত, মূল্যস্ফীতি হ্রাস, বিশ্বব্যাপী মন্দা সত্ত্বেও প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের ওপরে ধরে রাখা বাজেট সমালোচনাকারীরা দেখছেন না। তিনি সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে বলেন, তার সরকারের প্রতিটি বাজেটই বাস্তবায়িত হয়েছে বলেই দেশের উন্নয়নের সূচক ঊর্ধ্বমুখী। প্রতিটি বাজেটেরই উন্নয়ন বাজেট ৯৬ ভাগ বাস্তবায়ন করেছে তার সরকার।
তিনি বলেন, সবসময়ই ৫ শতাংশ বাজেট ঘাটতি ধরা হয়ে থাকে। এটা কোন ঘাটতি নয়। এ ঘাটতি ধরেই মানুষ বাজেট থেকে সুফল পাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার নির্বাচনী ওয়াদা অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধের বিচার করা হয়েছে এবং সে বিচার অব্যাহত রয়েছে। প্রত্যেক যুদ্ধাপরাধীর বিচার বাংলার মাটিতে হবে।
দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সরকার দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। এখন আর বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানি করতে হচ্ছে না। বরং সুগন্ধি চাল রফতানি করা হচ্ছে। দরিদ্রদের বিনামূল্যে খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তার সরকার বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধীদের ভাতা দিয়ে যাচ্ছে। গর্ভকালীন মাতৃত্ব ভাতা বাবদ ১ লাখ ১৬ হাজার ৩শ’ মহিলাকে ৫শ’ টাকা করে দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। আগে এ ভাতা দেয়া হতো ৩৫০ টাকা।
তিনি বলেন, নবজাতক শিশুরা যেন পুষ্টিকর খাবার পায় এজন্য ১ লাখ মাকেও ৫শ’ টাকা করে ভাতা দেয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসিডদগ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসনে সরকার আর্থিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে ৩ লাখ ৬ হাজার প্রতিবন্ধীকে প্রশিণ ও ভিজিও থ্যারাপি চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের প্রতিবন্ধীরা বিশেষ অলিম্পিকে গিয়ে ২১টি স্বর্ণপদক জয় করে আনায় তার সরকার প্রতিবন্ধীদের জন্য কমপ্লেক্স নির্মাণ করছে। অটিস্টিক শিশুদের শিার জন্য একাডেমিও গড়ে তোলা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার প্রবীণ ও বয়স্কদের সন্তানের সঙ্গে বসবাসের জন্য আইন প্রণয়ন করেছে। এছাড়া প্রবীণ ও বয়স্কদের জন্য আবাসন গড়ে তুলতে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, কৃষকদের সহায়তার ল্েয তার সরকার ৯৬ সাল থেকে বিনা জামানতে কৃষি ঋণ বিতরণ করছে।
মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার যখন মতা গ্রহণ করে, তখন দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন মতা ছিল ৩২শ’ মেগাওয়াট। তাদের দূরদর্শী সিদ্ধান্তের কারণেই বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন মতা ১১ হাজার ৭৩৫ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, তার সরকার চাহিদার সঙ্গে যোগানের কথা ল্য রেখেই নতুন নতুন আরও বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে চলেছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বায়োপ্লান্ট গ্যাস, সোলার প্যানেল সিস্টেমের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কাজ করছে তার সরকার।
জাতীয় উন্নয়নের জন্য অবকাঠামোর উন্নয়ন জরুরি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন এনেছে তার সরকার। ঢাকা শহরের রাস্তাঘাটের দিকে তাকালেই দেশবাসী তা সহজেই অনুমান করতে পারছে।
বিরোধী দলীয় নেত্রীকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দেশের উন্নয়নের জন্য শিাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক নিয়োগের েেত্র ৬০ ভাগ নারী কোটা রাখা হয়েছে। প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সকল শিার্থীকে বিনামূল্যে বই প্রদান, শিার্থীদের বৃত্তি প্রদান এবং ৫ম ও ৮ম শ্রেণীতে পাবলিক পরীা চালু করা হয়েছে। এতে পাসের হার ৯২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সারাদেশে কমিউনিটি কিনিক চালু করা হয়েছে। তাতে বিনামূল্যে ১৯ ধরনের ওষুধ দেয়া হচ্ছে। ফলে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমে এসেছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে ওয়েব পোর্টাল চালু করা হয়েছে। পৃথিবীর সব থেকে বড় ওয়েব পোর্টাল চালু করছে তার সরকার। দেশব্যাপী ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির প্রসারের কারণে এখন সারাদেশে ৪ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে।
তিনি বলেন, ১৬ কোটি জনগণের বাংলাদেশে ১১ কোটি মোবাইল সিম ব্যবহার হচ্ছে। এর মধ্যে ৮০ লাখের ওপর বাংলাদেশী বিদেশে বসবাস করছে।
তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তির এই উন্নয়ন ঘটানোর ফলে দেশের মানুষ আজ নানা ধরনের বিল, পরীার রেজাল্ট, টাকা পাঠানো ইত্যাদি কাজগুলো মোবাইলেই সেরে ফেলতে পারছে। এভাবেই তার সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করে চলছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এত অল্প সময়ে কিভাবে সাফল্য অর্জন করলো, বিদেশীরা তা জানতে এখন বাংলাদেশে আসছে। নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে দেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে, বিদেশীরা তা স্বীকার করে নিয়েছে।
তিনি বলেন, সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প ব্যাপক অবদান রেখে চলেছে। এর ফলে অনেক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।
গার্মেন্টস সেক্টরের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ অল্পসময়ে শ্রমিক মজুরি কয়েকগুন বৃদ্ধি করেছে, যা অনেক উন্নত দেশও পারেনি। গার্মেন্টস কর্মীদের বেতন ১৬শ’ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ হাজার ৩শ’ টাকা উন্নীত করা হয়েছে। তিনি বলেন, শ্রমিকদের জীবনমানের নিশ্চয়তায় তার সরকার গার্মেন্টস কারখানা পরিদর্শন ইন্সপেক্টর নিয়োগ দিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, শিল্পের বিকাশ ঘটাতে তার সরকার বিনিয়োগ বান্ধব কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। কৃষি, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, ওষুধ, জাহাজ, খেলনা, চামড়া ও আইটি পণ্য রফতানি বাড়াতে এবং বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বিদেশীদের জন্য তার সরকার দেশে বিভিন্ন অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের ল্েয তার সরকার ইতোমধ্যে ওষুধ, সিরামিক, জাহাজসহ নানা পণ্যসামগ্রী রফতানি করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সমুদ্রসীমা থেকে সম্পদ আহরণ ও ব্যবহারের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, তার সরকার যেসমস্ত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বাজেট বাস্তবায়ন হলে মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে এবং তারা আগের চেয়ে আরও ভাল থাকবে।
কর্মসংস্থানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সরকার বিগত ৫ বছরে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান করেছে। বেকার যুবকদের ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করেছে। চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি করেছে। সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়িয়েছে এবং আরেক দফা বেতন বাড়ানোর জন্য কমিশন গঠন করে দেয়া হয়েছে। কমিশন ডিসেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট দিলে তাদের বেতন আবার বাড়ানো হবে।
তিনি বলেন, শিশু শ্রম বন্ধে তার সরকার জাতীয় শিশু শ্রম নীতিমালা গ্রহণ করেছে। শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে বিরত রাখতে তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
বিরোধী দলের নেত্রীর বক্তব্যে খাদ্যে ভেজালের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সরকারও দীর্ঘ সময় মতায় ছিল। তখন যদি জাতীয় পার্টির সরকার এসব বিষয়ে নজর দিত, তাহলে আজ এ ভয়াবহ আকার ধারণ করতো না। তিনি বলেন, তার সরকার মোবাইল কোর্ট বসিয়ে খাদ্যে ভেজাল বন্ধে কাজ করে চলেছে বলেই দেশবাসী এবং বিরোধী দলীয় নেতা ভেজালের কথা জানতে পেরেছেন। এতদিন এর ভয়াবহতা আড়ালেই ছিল।
নদী দূষণের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নদীর গভীরতা ও নাব্যতা বৃদ্ধির ল্েয তার সরকার ড্রেজিং কার্যক্রম চালু করেছে। তিনি বলেন, বায়ু দূষণ রোধে তার সরকার বিদেশ থেকে যে তেল আমদানি করছে তা বায়ু বান্ধব।
প্রধানমন্ত্রী আজ সংসদে শুধু শহরের বাসিন্দাদের জন্যই নয়, গ্রামের সাধারণ মানুষের জন্যও ফ্যাট বাড়ি নির্মাণে তার সরকারের পরিকল্পনার কথা জানান। তিনি বলেন, গ্রামের মানুষের জন্য এমনভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে, যেন তারা হাঁস-মুরগি পালনসহ ধান, চাল, পাট শুকাতে পারেন সে ল্েযই তার সরকার তাদের উন্নত জীবনযাপনের সুব্যবস্থা করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রে পরিণত করতে ২০২১ সালের যে রূপকল্প গ্রহণ করেছে, তা এর আগেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, তবে সে েেত্র প্রয়োজন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দেশের জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূল করেছে। মানিলন্ডারিংয়ের টাকা বিদেশ থেকে ফেরত এনেছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করে চলেছে।
অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে শেখ হাসিনা দেশীয় শিল্পের ওপর করারোপ না করার প্রস্তাব করেন। আমদানিকৃত মোবাইল ফোনের ওপর শুল্ক ও রেগুলারিটি ডিউটি বাদ দেয়ার প্রস্তাব করে মোবাইল ব্যবহারকারীর ওপর সারচার্জ ধরার প্রস্তাব করেন।
তিনি বলেন, মোবাইল ব্যবহারের ওপর সারচার্জের আয় দিয়ে শিা ও অবকাঠামো খাতের উন্নয়নে ব্যবহারের পরামর্শ দেন। আমদানিকৃত এলপিজি সিলিন্ডারের ওপর থেকেও তিনি শুল্ক প্রস্তাব কমানোর প্রস্তাব করেন। এছাড়া ফ্যাট ও দালানের ওপর যে উৎসে করের প্রস্তাব কমানোরও পরামর্শ দেন।
পুঁজিবাজারের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বাজার এখনকার সমস্যা কাটিয়ে ওঠেছে। একে গতিশীল করতে সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিটি যেসব পদপে গ্রহণ করেছে তা অব্যাহত রাখার পরামর্শ দেন। ওই সব পদপে যেন পরিবর্তন না করা হয়, সেদিকেও তিনি নজর রাখার নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সকলকে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। এগিয়ে যাওয়ার যে গতিধারা শুরু হয়েছে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে তা অব্যাহত রাখতে সকল প্রতিকূলতার মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
সূত্র বাসস–