নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনপুর এলাকায় অবস্থিত জাহিন নিটওয়্যার্স নামের একটি রফতানিমুখী পোশাক কারখানায় লাগা আগুন অবশেষে নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিটের চেষ্টায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) বন্ধের দিন থাকায় প্রতিষ্ঠানটির মূল অংশ ছুটি ছিল। তাই কারখানায় খুব অল্প সংখ্যক শ্রমিক ছিলেন। তবে প্রতিটি ইউনিটে কিছু শ্রমিক তৈরি পোশাক প্যাকেট করে শিপমেন্টের জন্য ৬ নং ইউনিটে সরানোর কাজ করছিল।
এরইমধ্যে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে গার্মেন্টসে আগুন লাগার সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস। মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পড়ে কারখানার তিনটি ফ্লোরে। শেষপর্যন্ত ১৬টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদরদফতরের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান শিকদার গণমাধ্যমকে বলেন, রাত ৯টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। হতাহতের কোনো খবর আমরা পাইনি। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও প্রাথমিকভাবে বলতে পারছি না।
এদিকে আগুন লাগার পরই প্রতিষ্ঠানের আশপাশে বসবাস করা শ্রমিকরা আগুন নেভাতে আসেন। ধোঁয়ার কারণে পাশের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শ্রমিকরা ফ্যাক্টরির ২ নং ইউনিটের দো’তলা শেডের আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সেখান থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে শ্রমিকরা সেখানে ঢুকে জানালার কাঁচ ভেঙে দেন যাতে ধোঁয়া বের হতে পারে। কিন্তু আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকলে তারা নেমে এসে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান নেন।
খবর পেয়ে ফায়ার ব্রিগেড এসে আগুন নেভানো শুরু করে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর উপ-সহকারি পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন গণমাধ্যমে জানান, বিকেল সাড়ে চারটায় আগুন লাগার খবর পাই। বেলা পৌনে পাঁচটায় ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এরপর ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, সোনারগাঁও, বন্দরসহ আশপাশের ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলো এসে আগুন নেভানোর কাজ করতে থাকে।
প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক শফিউদ্দিন ভূইয়া জানান, আগুন লাগার পরপর নিরাপত্তা রক্ষীরা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিতে বলেন। ফায়ার সার্ভিস আসতে আসতে আগুন চারটি ইউনিটে ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিদ্যুৎ বিভাগকে ফোন দিয়ে বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেন বলেন, কারখানার পরিসর বড় হওয়ায় এবং আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় নিয়ন্ত্রণে অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের বেগ পেতে হয়েছে। তবে কারখানা বন্ধ থাকার কারণে ভেতরে কোনো শ্রমিক আটকা পড়েনি বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। কোনো হতাহতের খবর এখনও পাওয়া যায়নি।