মাইলেজ ভাতা বহাল রাখার দাবিতে আন্দোলনে নামা ট্রেনের রানিং স্টাফরা ধর্মঘটে যাচ্ছেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আগামী ৩০ জানুয়ারি রাত ১২টার পর থেকে তারা ট্রেন চালাবেন না বলে জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদারকে দেওয়া চিঠিতে রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও কর্মচারী শ্রমিক সমিতি এ কর্মসূচির কথা জানিয়েছে।
চিঠির সত্যতা নিশ্চিত করে সমিতির সভাপতি মো. রফিক চৌধুরী সমকালকে বলেছেন, ‘১৬০ বছর ধরে রেলের রানিং স্টাফরা মাইলেজ ভাতা পাচ্ছেন। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় তা বন্ধ করেছে। গত ১৪ মাস ধরে রানিং স্টাফরা বারবার আল্টিমেটাম দিলেও রেল মন্ত্রণালয় দাবি পূরণ করেনি। সাধারণ রানিং স্টাফরা মাইলেজ ভাতা ছাড়া ট্রেন চালাতে রাজি নন। তাদের এ অবস্থানের কারণে কর্মবিরতির কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছে সমিতি।’
ট্রেনের চালক (লোকো মাস্টার), গার্ড ও টিকিট পরিদর্শকদের (টিটি) রানিং স্টাফ বলা হয়। রেলের সংস্থাপন কোড অনুযায়ী, রানিং স্টাফরা দিনে আট দিনে আট ঘণ্টার বেশি দায়িত্ব পালন করলে বা ১০০ মাইলের বেশি ট্রেন চালালে একদিনের বেতনের সমপরিমাণ টাকা মাইলেজ বা রানিং ভাতা হিসেবে পাবেন।
জনবল সঙ্কটের কারণে চালক, গার্ড ও টিটিদের দৈনিক কর্মঘণ্টা ১২ ঘণ্টা। গত ৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপনে জানায়, মাইলেজ ভাতা মূল বেতনের অংশ হিসেবে গণ্য হবে না। তা পেনশনেও যোগ হবে না। ভাতার পরিমাণ মাসিক মূল বেতনের বেশি হতে পারবে না।
প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে রানিং স্টাফরা গত মাসেও দৈনিক আট ঘণ্টার বেশি কাজ না করা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। তবে রেল সচিবসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর কর্মসূচি স্থগিত করে। রানিং স্টাফ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান জানিয়েছেন, এবার দৈনিক আট ঘণ্টার বেশি নয়, পুরোপুরি কর্মবিরতি পালন করবে রানিং স্টাফরা। মাইলেজ ভাতা বহাল না রাখতে আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ট্রেন চলবে না।
রানিং স্টাফরা বলেছেন, দিনে ১৫-১৬ ঘণ্টা কাজ করতে হয় তাদের। তাই মূল বেতনের চেয়ে মাইলেজ ভাতা বেশি পান। গত বছরের জুনে রানিং স্টাফদের বেতনভাতাও সরকারি আইবাস প্লাস প্লাস সফটওয়্যারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আইবাসে মাসে তিন হাজার কিলোমিটারের বেশি ট্রেন চালানোর তথ্য ইনপুট দেওয়ার সুযোগ নেই। অথচ রানিং স্টাফরা মাসে ছয়-সাত হাজার কিলোমিটার ট্রেন চালান। রেলমন্ত্রীসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন রানিং স্টাফরা।
গত ১০ জানুয়ারি রেলওয়ে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিল। তবে রানিং স্টাফদের অভিযোগ, গত কয়েক মাসে যে চালক কর্মী অবসরে গিয়েছেন, তাদের পেনশন হিসাবে সমস্যা হচ্ছে।