বিয়ের জন্য নারী-পুরুষের বয়সের ব্যবধান কত হওয়া জরুরি?

Slider লাইফস্টাইল


ঢাকা: বর্তমানে বিয়ের জন্য নারী-পুরুষের বয়সের ব্যবধানকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। কেননা দাম্পত্য জীবনে মধুর সম্পর্ক বজায় রাখতে এই ব্যবধানই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বয়সের ব্যবধান যত কম হবে তাদের বৈবাহিক জীবন ততটাই মধুর হবে বলেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বয়সের পার্থক্য কম হলে সংসারের স্থায়িত্ব বেশি হয়। একে অপরের মনের গতিবিধি বুঝে চলার ক্ষমতা বেশি থাকে বলেই এটা সম্ভবপর হয়।

ভারতের সংবাদমাধ্যম জিনিউজ ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, অনেকের ক্ষেত্রে দুই বছরের ব্যবধানে সম্পর্ক মধুর হয়। কারও কারও ক্ষেত্রে আবার তা হয় ১০ বছরের ব্যবধানে। তবে বেশিরভাগ নারীই তাদের চেয়ে কয়েক বছরের বড় পুরুষকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

এবার জেনে নিন, বিয়ের জন্য নারী-পুরুষের বয়সের ব্যবধান আসলে কত হওয়া জরুরি?

৫-৭ বছরের ব্যবধান

যেসব দম্পতিদের বয়সের ব্যবধান ৫ থেকে ৭ বছরের মধ্যে হয় তাদের মধ্যে ঝগড়া, বিবাদ, ভুল বোঝাবুঝি কম হয়। দুজনের মধ্যে একজন যদি পরিণত বয়সের হয় তবে সে সম্পর্ক শক্ত হাতে ধরে রাখে। বয়সের এই ব্যবধানকে বিয়ের জন্য আদর্শ বলে মনে করা হয়। কারণ এতে একে অপরকে খুব কাছে থেকে বোঝা সম্ভব হয়।

১০ বছরের ব্যবধান

যদি দুজনের মধ্যে ভালোবাসা থাকে, তাহলে অনেকের ক্ষেত্রে ১০ বছর বয়সের ব্যবধানকে বিয়ের জন্য আদর্শ মনে করা হয়। তারা আগেই নিজেদের জীবনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ঠিক করে নেয়। এ কারণে ১০ বছরের ব্যবধান তাদের জীবনে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে না। তবে অনেক ক্ষেত্রে এমন বয়সের ব্যবধানে স্ত্রী স্বামীর ওপরে কোনো কথা বলতে না পারার কারণে সমস্যা দেখা দেখা দিতে পারে।

২০ বছরের ব্যবধান

আপাতদৃষ্টিতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে এই বয়সের ব্যবধান আদর্শ নয়। যদিও অনেক বিখ্যাত দম্পতি আছেন যাদের বয়সের ব্যবধান ২০ বছরের বেশি। এই ব্যবধানে লক্ষ্য, উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং মতামতের ব্যাপক পরিবর্তন হয়। সব থেকে বড় সমস্যা হতে পারে সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রে। বয়স্ক সঙ্গী দ্রুত সন্তান নিতে চাইবে। সে ক্ষেত্রে কম বয়সী সঙ্গী আগ্রহী হবে না। তাদের চিন্তাধারার পার্থক্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

বয়সের ব্যবধান কতটা প্রভাব ফেলে?

বয়সের ব্যবধান সম্পর্কে অনেকটাই প্রভাব ফেলে। কারণ এতে মতামতের বিশাল পার্থক্য থাকে। তবে বর্তমান বিশ্ব প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। সাধারণত বয়সের ব্যবধান যত বেশি হয় দম্পতিরা তত বেশি সমস্যার মুখোমুখি হয়। এজন্য বয়সের ব্যবধান কম হলেই তাকে আদর্শ ধরা হয়।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রতিনিধি দলের এক গবেষণায় দেখানো হয়েছে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বয়সের পার্থক্য বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের হারও বেড়ে যায়। গবেষকরা বলেন, স্বামী-স্ত্রীর বয়সের পার্থক্য ৫ বছর হলে তাদের বিচ্ছেদের আশঙ্কা সমবয়সী দম্পতির তুলনায় ১৮ শতাংশ বেশি! বয়সের পার্থক্য ১০ বছর হলে বিচ্ছেদের আশঙ্কা ৩৯ শতাংশ এবং ২০ বছর হলে ৯৫ শতাংশ বেড়ে যায়!

তবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যের সম্পর্কের ওপরও বিচ্ছেদের ব্যাপার অনেকাংশে নির্ভরশীল থাকে। সম্পর্ক যত ঘনিষ্ঠ হবে বিচ্ছেদের সম্ভাবনা ততই কম।

ওই গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, বয়সের বেশি ব্যবধানে বিয়ের পরেও কমপক্ষে ২ বছর একত্রে থাকলে বিচ্ছেদের আশঙ্কা ৪৩ শতাংশ কমে আসে। আবার ১০ বছর একত্রে থাকলে তা ৯৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *