নাঈমের প্রতি ভালোবাসা দেখানোর কারণ জানালেন সেই সামি

Slider বিচিত্র

বনানীর অগ্নিকাণ্ডের সময় অধিকাংশ মানুষ যেখানে ছবি তুলতে ব্যস্ত ছিল সেখানে ব্যতিক্রম ছিল কড়াইল বস্তির শিশু নাঈম। পরে তার প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে ৫ হাজার ডলার পুরস্কারের ঘোষণা করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ও সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার সন্তান ওমর ফারুক সামি। পাশাপাশি তার যাবতীয় পড়ালেখার দায়িত্ব গ্রহণেরও কথাও জানান তিনি। এবার ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে ছোট্ট এই শিশুর প্রতি ভালোবাসা দেখানোর কারণ জানালেন সামি।

তার সেই ফেসবুক স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো।
আসসালামু আলাইকুম, সম্মানিত বন্ধুরা আপনারা জানেন দুদিন পূর্বে রাজধানী বনানীতে অগ্নিকাণ্ডের পর হাজার হাজার জনতা যখন সেলফি-ভিডিওতে অস্থির ছিলো, ঠিক সেই মুহূর্তে ফায়ার সার্ভিসের একটি ছিদ্র পাইপ শক্ত করে ধরে ছিলো নাঈম নামে এক ছোট্ট শিশু। সেই নাঈমের পাইপ ধরার একটি স্থির চিত্র সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছিল।

স্বাভাবিক নিয়মে ছবিটি আমার টাইমলাইনে আসে এবং আমার হৃদয়ে নাড়া দেয়। আমি ছোট নাঈমের কাজে খুবই খুশি হয়েছি। তার জন্য তখনই মন থেকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জন্ম নেয়। সাথে সাথে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত আমার বন্ধুবর সাংবাদিক আওয়াজবিডির সম্পাদক শাহ আহমদকে কল দিয়ে ছেলেটির সন্ধান করার অনুরোধ জানাই। সাংবাদিক শাহ আহমদ আমার কথায় দেশের সাংবাদিকদের মাধ্যমে নাঈম ও তার মায়ের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেয়। নাঈমের মায়ের কাছ থেকে জানতে পারি সে খুব কষ্ট করে লেখাপড়া করছে, সে পুলিশ অফিসার হতে চায়। তাৎক্ষণিক আমার মাথায় আসলো ছেলেটার পাশে দাঁড়ানো উচিত। দয়া কিংবা নামের জন্য নয় বরং একজন মানবতাবাদীর পাশে দাঁড়ানোকে দায়িত্ব মনে করে বড় ভাই হিসেবে পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই। খুব শিগগিরই আমার আব্বা নাঈমের বাসায় যাবেন এবং বিস্তারিত আলাপ করে টাকা দেওয়ার মাধ্যম জানাবেন। নাঈমের সাথে আমি দুবার কথা বলেছি সে আমার জন্য দোয়া করেছে এবং বলেছে, ভবিষ্যতে সুযোগ হলে দেখা করবে।

আমার এই ঘোষণার পর আওয়াজবিডির মাধ্যমে সারাদেশে প্রচার হয়ে যায়। দেশের প্রায় সব প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার হতে থাকে যদিও এই প্রচারণায় আমার কোন ইচ্ছে বা জরুরতই ছিল না। এদিকে সংবাদটি শুনে আমার ফেসবুকে অগণিত বার্তা আসতে থাকে। বার্তাতে সবাই মানবতার পক্ষে দাঁড়ানোয় অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। সকল বার্তার জবাবে একটা কথাই বলব বিষয়টা ছিল কেবল মানবতা ও ভালোবাসা।

প্রিয় জন্মভূমিতে নাঈমদের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাক এই দোয়া করি। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। আপনাদের কাছে একটাই চাওয়া নাঈমদের সুযোগ করে দিন, নাঈমরা আপনাকে একটি মানবতাবাদী পরিবেশ উপহার দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *