আত্মত্যাগের মন্ত্রে বলীয়ান হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে লড়াইয়ে

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

57122_lead

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, স্বাধীনতার মূল স্বপ্নই ছিল গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। কিন্তু সেই স্বপ্ন আজ কেড়ে নিয়েছে জবরদখলকারী বর্তমান অবৈধ সরকার। প্রতিনিয়ত এদেশের নিরপরাধ নাগরিকদের এখন হত্যার শিকার হতে হচ্ছে। কথায় কথায় চালানো হচ্ছে গুলি। চোখের পানি ঝরছে হাজারো মা-বাবা, স্ত্রী, বোন ও সন্তানের। এমন এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একটি উপায়, আবারো ৫২’র ভাষা আন্দোলনের সেই চেতনাকে বুকে ধারণ করে আত্মত্যাগের মন্ত্রে বলীয়ান হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে লড়াইয়ে। চারিদিকে একই ধ্বণি হবে-এক হাতে মুষ্টিবদ্ধ করে রাখা বাকশালী গণতন্ত্র আর নয়। ভোটের অধিকার চাই, বাক স্বাধীনতা চাই, বেঁচে থাকার গ্যারান্টি চাই।
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বায়ান্ন’র ২১ ফেব্রুয়ারির সকল শহীদদের স্মরণে আজ এক বাণীতে এ কথা বলেন বেগম খালেদা জিয়া।
ভাষা আন্দোলনের শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে তিনি বলেন, ২১শে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতীয় জীবনে এক তাৎপর্যময় দিন। মাতৃভাষা বাংলার অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার জন্য সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা জীবন বাজি রেখে রাজপথে নেমে এসে পুলিশের গুলিতে আত্মদান করে। তাদের এই মহিমান্বিত আত্মত্যাগের বিনিময়ে রচিত হয়েছে আমাদের জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের প্রথম সোপান।
তিনি বলেন, বায়ান্ন সালের ২১শে’র পথ ধরেই এদেশের সকল গণতান্ত্রিক এবং স্বাধীকারের সংগ্রাম সম্প্রসারিত হয়েছে, অর্জিত হয়েছে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমাদের জাতীয় স্বাধীনতা। সংখ্যাগরিষ্ঠের ভাষা বাংলাকে অন্যতম অন্যতম রাষ্ট্রভাষার সরকারী স্বীকৃতি না দিয়ে তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এদেশের ওপর নিজেদের সাংস্কৃতিক আধিপত্য বজায় রাখতে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল-এদেশকে স্থায়ীভাবে পরাধীন রাখার জন্য। কিন্তু ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে তা প্রতিরোধ করে।
খালেদা জিয়া ছাত্র জনতার অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, ছাত্র-জনতার সেই আত্মত্যাগের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন এ দেশ। স্বাধীনতার মূল স্বপ্নই ছিল গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। কিন্তু সেই স্বপ্ন আজ কেড়ে নিয়েছে জবরদখলকারী বর্তমান অবৈধ সরকার। গণতন্ত্রকে পায়ে ঠেলে জনগণের ভোটের অধিকার, কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে তারা। নিরাপদে বেঁচে থাকার গ্যারান্টিও আজ নেই। প্রতিনিয়ত এদেশের নিরপরাধ নাগরিকদের এখন হত্যার শিকার হতে হচ্ছে। কথায় কথায় গুলি চলছে। চোখের পানি ঝরছে হাজারো মা-বাবা, স্ত্রী, বোন ও সন্তানের। এমন এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একটি উপায়, আবারো ৫২’র ভাষা আন্দোলনের সেই চেতনাকে বুকে ধারণ করে আত্মত্যাগের মন্ত্রে বলীয়ান হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে লড়াইয়ে। চারিদিকে একই ধ্বণি হবে-এক হাতে মুষ্টিবদ্ধ করে রাখা বাকশালী গণতন্ত্র আর নয়। ভোটের অধিকার চাই, বাক স্বাধীনতা চাই, বেঁচে থাকার গ্যারান্টি চাই।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতি এখনো বিজাতীয় আগ্রাসন থেকে মুক্ত হয়নি। নিজস্ব ভাষা ও দেশজ সংস্কৃতির উৎকর্ষ সাধন এবং সংস্কৃতির আগ্রাসন প্রতিরোধ করাও তাই এবারের ভাষা দিবসের অন্যতম অঙ্গিকার।
সব শেষে খালেদা জিয়া বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করায় এই দিবসটিতে বিশ্বের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী তাদের নিজস্ব মাতৃভাষার চর্চা ও বিকাশ ঘটাতে অদম্য প্রেরণা লাভ করবে। মহান ২১শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের আয়োজিত নানাবিধ কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি। ভাষা শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের জানান তিনি। পাশাপাশি ভাষা সৈনিকদের শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন জানিয়ে তাদের সুখ, শান্তি ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *