আজ হুমায়ূন আহমেদের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী

Slider সাহিত্য ও সাংস্কৃতি


ঢাকা: ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ুন আহমেদ৷ তার ডাক নাম ছিল কাজল৷ বাবার রাখা প্রথম নাম শামসুর রহমান হলেও পরে তার বাবা ছেলের নাম বদলে রাখেন হুমায়ূন আহমেদ৷

১৯৭২ সালে প্রকাশিত হুমায়ূন আহমেদের প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ পাঠকমহলে এতটাই নন্দিত হয়েছিল যে এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাকে৷ ২০১২ সালের ১৯ জুলাই মারণব্যাধি ক্যান্সারের কাছে হার মানার আগে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, গীতিকার, নাট্যকার, চলচ্চিত্র পরিচালক- প্রতিটি ক্ষেত্রেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন তিনি৷

রসবোধ আর অলৌকিকতার মিশেলে বাংলা কথাসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন হুমায়ূন আহমেদ৷ তাঁর সৃষ্টি হিমু, মিছির আলী, বাকের ভাই চরিত্রগুলো পেয়েছে ‘অমরত্ব’৷ তাঁর লেখা গানগুলো এখনও মানুষের মুখে মুখে৷

প্রথম স্ত্রী গুলতেকিনের সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদ৷ উপমহাদেশের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁর নাতনি ছিলেন গুলতেকিন৷ প্রেম করার কয়েক বছর পর ১৯৭৩ সালে দুজন বিয়ে করেছিলেন৷ এরপর ২০০৩ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়৷

১৯৮০-১৯৯০ এর দশকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য ধারাবাহিক এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র রচনা শুরু করেন তিনি৷ ১৯৮৩ সালে তার প্রথম টিভি কাহিনীচিত্র ‘প্রথম প্রহর’ বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার শুরু হলে বেশ জনপ্রিয়তা পায়৷

নব্বই দশকের মাঝামাঝি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করে লেখালেখিতে পুরো মনোযোগ দেন হুমায়ূন আহমেদ৷

তাঁর টেলিভিশন ধারাবাহিকগুলোর মধ্যে ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘বহুব্রীহি’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘নক্ষত্রের রাত’, ‘অয়োময়’, ‘আজ রবিবার’, ‘নিমফুল’, ‘তারা তিনজন’ ‘মন্ত্রী মহোদয়ের আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’, ‘সবুজ সাথী’, ‘উড়ে যায় বকপঙ্খী’, ‘এই মেঘ এই রৌদ্র’ এখনও ইউটিউবে খুঁবে বেড়ান অনেকেই৷

হুমায়ূন আহমেদের চিত্রনাট্য ও পরিচালনার ছবিগুলোর মধ্যে ‘আগুনের পরশমণী’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’, ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ দর্শক ও সমালোচকদের মন জয় করেছে৷ ‘খেলা’, ‘অচিন বৃক্ষ’, ‘খাদক’, ‘একি কাণ্ড’, ‘একদিন হঠাৎ’, ‘অন্যভূবন’ এর মত নাটকগুলোর আলোচিত ডায়লগ এখনও অনেকের মুখেই শোনা যায়৷

বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৯৪ সালে একুশে পদক লাভ করেন তিনি৷ এছাড়া বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), হুমায়ূন কাদিও স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কারসহ (১৯৮৮) অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন নন্দিত এই কথাসাহিত্যিক৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *