মাদারীপুরে এক নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী ৩২৫ ভোট পেয়ে হারালেন জামানত

Slider টপ নিউজ

মাদারীপুর: মাদারীপুরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো: মজিবর রহমান মোল্লা জামানত হারিয়েছেন। তিনি চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে পেয়েছেন মাত্র ৩২৫ ভোট।

এই ভরাডুবি হয়েছে আওয়ামী লীগ তথা নৌকার দুর্গ হিসেবে পরিচিত মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে।

বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হওয়া মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মৌসুমী হক সুলতানা। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।

নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মৌসুমী হক সুলতানা পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৪০২ ভোট। তার নিকটতম হয়েছেন আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী তোফাজ্জেল হোসেন গেন্দু কাজী। তিনি পেয়েছেন চার হাজার ৫৭৩ ভোট। আর আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো: মজিবর রহমান মোল্লা পেয়েছেন মাত্র ৩২৫ ভোট।

লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে ১৫ হাজার ৫১৪ জন ভোটারের মধ্যে ১০ হাজার ৬২২ জন ভোটার তাদের ভোট প্রদান করেন।

আওয়ামী লীগ প্রার্থীর চেয়ে বিজয়ী প্রার্থী পাঁচ হাজার ৭৭ ভোট বেশি পেয়েছে। আর প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ ভোটও পাননি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী। এ কারণে তাকে জামানত হারাতে হয়েছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা বলেন, এবারের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী অনেকের পছন্দের ছিল না। তারা প্রকাশ্যে বিরোধিতা করতে না পারলেও টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন নিয়েছেন। সে কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কোনো দায়িত্বশীল নেতা তার পক্ষে কাজ করেনি। যারা দলের জন্যে কাজ করেছেন, তাদেরই ভোট দিয়েছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নৌকার প্রাথী মো: মজিবর রহমান মোল্লাকে সাধারণ ভোটারদের অনেকেই চেনেন না। তিনি নৌকার মনোনয়ন নিলেও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দেখা মিলত না। দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও তাকে ভালোভাবে মেনে নেয়নি। স্থানীয় লোকজনের কাছে জনপ্রিয় না হওয়ায় তার পক্ষে জোরালো কোনো প্রচার-প্রচারণা হয়নি। যে কারণে আওয়ামী লীগের দুর্গয় নৌকা প্রতীক নিয়েও জামানত হারিয়েছেন এই চেয়ারম্যান প্রার্থী।

পরাজয়ের কারণ জানতে আওয়ামী লীগের প্রাথী মো: মজিবর রহমান মোল্লাকে একাধিকবার ফোন দিয়ে ও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও তিনি সাড়া দেননি।

তবে পরাজয় প্রসঙ্গে কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপিকা তাহমিনা সিদ্দিকা বলেন, ‘মাদারীপুরের জনপদ আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। এখানে আওয়ামী লীগের যত জাতীয় নির্বাচন হয়েছে, সবটাতেই জয় পেয়েছেন। কিন্তু এবার ইউপি নির্বাচনে এক প্রভাবশালী নেতার অনৈতিক বাণিজ্যের কারণে নৌকার পরাজয় হয়েছ। এতে আমরা আশাহত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব দেখে হাইব্রিড জাতীয় নেতাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবেন বলে আমার বিশ্বাস।

উল্লেখ্য, দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে কালকিনি ও ডাসার উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে একজন চেয়ারম্যান পদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছে। বাকি ১২ ইউনিয়নের মধ্যে ৯টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ৩টিতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *