দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বহিষ্কার চান জিএম কাদের

Slider রাজনীতি

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের বহিস্কার চেয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। সোমবার দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে টাঙ্গাইল জেলা জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় জিএম কাদের এই দাবী করেন।

তিনি বলেন, ২০১১ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের পঞ্চদশ সংশোধনীতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখা হয়েছে। তাই আওয়ামী লীগের উচিত দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ওই প্রতিমন্ত্রীকে দল থেকে বহিষ্কার করা। প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছে করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন।

তিনি বলেন, তথ্য প্রতিমন্ত্রী রাষ্ট্রধর্ম মানি না বলে, সংবিধান সংরক্ষণের শপথ ভঙ্গ করেছেন। তথ্য প্রতিমন্ত্রীর উচিৎ পদত্যাগ করা।

জিএম কাদের বলেন, দেশের ৯২ ভাগ মুসলমানের মনের আশা পূরণ করতেই পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ঘোষণা করেন। এর বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র দেশের মানুষ মেনে নেবে না। আবার জননন্দিত রাষ্ট্রনায়ক পরলোকগত রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে কটূক্তি করে ওই প্রতিমন্ত্রী জঘন্য কাজ করেছেন। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় সুনাম অর্জনকারী আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী নিয়ে কটাক্ষ করে গর্হিত কাজ করেছেন। অবশ্যই তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি এখন নীতি হয়ে গেছে। দুর্নীতি এখন স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে পড়েছে। কেউ দুর্নীতি না করলে তাকে সবাই পাগল মনে করে। যারা ঘুষ খায়, পণ্যে ভেজাল দেয়, কালো টাকার মালিক তারাই রাজনীতিতে এখন এগিয়ে যাচ্ছে। তারা দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। বিদেশে বাড়ি-গাড়ি, ব্যবসা খুলে বিলাসী জীবনযাপন করছে। কিন্তু, দেশের বেশিরভাগ মানুষই জীবন চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। অল্প টাকার জন্যও অনেকেই চিকিৎসা করাতে পারে না।

তিনি বলেন, ভালো মানুষেরা রাজনীতিতে টিকতে পারছে না। ভালো মানুষেরা রাজনীতি থেকে বিতাড়িত হয়ে যাচ্ছেন। তাই দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হচ্ছে না।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জিএম কাদের আরো বলেন, রাজনীতিতে স্থবিরতা চলছে। সরকারি দল রাজনীতিতে নেই, তারা সরকার পরিচালনায় ব্যস্ত।

তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের পর থেক দেশের মানুষ বুঝেছিল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিই দেশ পরিচালনা করবে। কিন্তু এই দুটি দল দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। তাই দেশের মানুষ এক বুক আশা নিয়ে জাতীয় পার্টির দিকে তাকিয়ে আছে। তারা জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায়। তাই দলকে আরো শক্তিশালী করতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান।

এসময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু তথ্য প্রতিমন্ত্রীর প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, শক্তি থাকলে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করে দেখান। আমাদের শক্তি থাকলে, আমরা রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রাখব। জাতীয় পার্টি রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম নিয়ে যে কোনো ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করবে। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ঘোষণা করে সকল ধর্মের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করেছিলেন। ৯০ সালের পর থেকে দুটি দল যে উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরছে, তার ভিত্তি তৈরি করেছিলেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে ক্রান্তিকাল চলছে। জাতীয় পার্টি দুর্বার বেগে এগিয়ে চলছে, শক্তি অর্জন করছে। গণমানুষের আস্থা অর্জন করে জাতীয় পার্টি দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করবে।

এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, লিয়াকত হোসেন খোকা, যুগ্ম মহাসচিব মো. বেলাল হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা নুরুচ্ছফা সরকার, মোজাম্মেল হক, ছাত্র সমাজ সাধারণ সম্পাদক আল মামুন।

উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মনিরুল ইসলাম মিলন, মো. জহিরুল আলম রুবেল, ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক, যুগ্ম মহাসচিব মো. শামসুল হক, মো. জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য হুমায়ুন খান, আনোয়ার হোসেন তোতা, এমএ রাজ্জাক খান, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সাত্তার গালিব, তিতাস মোস্তফা, মামুনুর রহিম সুমন, সাবেক নেতা রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় নেতা জেসমিন নূর প্রিয়াঙ্কা, ফারুক শেঠ, রিয়াজ আহমেদ, আনোয়ার হোসেন আনু, হাজী লিটন, আব্দুল লতিফ ও কাজী মামুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *