ডিসিসি উত্তরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনিসুল

Slider অর্থ ও বাণিজ্য গ্রাম বাংলা

64056_anisul

ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচন আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সচিবালয়ে মন্ত্রি পরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় স্থানীয় সরকার সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে দ্রুত নির্বাচন দেয়ার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিসিসি নির্বাচন দিন, আর কতো আটকিয়ে রাখবেন? একাধিক সিনিয়র মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে আ’লীগের প্রার্থী হিসেবে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আনিসুল হকের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রী তখন বলেন, উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রার্থী ঠিক করাই আছে। আনিসুল হক। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী আমি দিচ্ছি। মন্ত্রীসভার এক সদস্য জানালেন, ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর দেরি করার দরকার নেই। নির্বাচন দিয়ে দেন। এ সময় মন্ত্রীসভার একজন সিনিয়র মন্ত্রী নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে মন্তব্য করলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিসিসি নির্বাচন হয়ে যাক। যে জিতবে জিতুক। এটা নিয়ে কোন টেনশন করি না। এর আগে গত বছরের ৮ ই ডিসেম্বর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিনের বৈঠকে তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে এ নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশের পরও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে কার্যত কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। গেলো বছরের এপ্রিলের দিকে নগরবাসীর দুর্ভোগ ও জনসমস্যা নিরসনের জন্য বিভক্ত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে আমলা প্রশাসকের বদলে ‘রাজনৈতিক প্রশাসক’ নিয়োগ  দেয়ার পরিকল্পনা করেছিল সরকার। তখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়- সরকার নগরবাসীর সেবার বিষয়টি মাথায় রেখেই এমন সিদ্ধান্ত হাতে নিতে চাইছে। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে ব্যাপক আলাপ আলোচনাও হয়। কিন্তু এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর আওয়ামী লীগের বর্ষিয়ান বেশ কয়েকজন নেতাদের সঙ্গে দেশের সুশীলসমাজের প্রতিনিধিরাও তীব্র বিরোধীতা করেন। একই সঙ্গে আইনি জটিলতায় সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হয় সরকার। এর আগে ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর জাতীয় সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুই ভাগ করা হয়। অভিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সর্বশেষ নির্বাচন হয় ২০০২ সালের এপ্রিলে। এরপর টানা প্রায় ১০ বছর মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা। প্রশাসক থাকা অবস্থায় ২০১২ সালের ২৯ এপ্রিল ডিসিসি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এতে ২৪ মে নির্বাচনের দিন ধার্য করা হয়। কিন্তু  ভোটার তালিকা ও সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত জটিলতা থাকায় নির্বাচনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে আদালত। এরপর ২০১৩ সালের ১৩ মে আদালত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। আবার ওই বছরের অক্টোবর- নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের ঘোষণা দেয় কমিশন। কিন্তু ঢাকার সুলতানগঞ্জ ইউনিয়ন ঢাকা সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় আবারো দেখা দেয় জটিলতা। এরপর নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়- দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ডিসিসি নির্বাচন দেয়া হবে। কিন্তু এক বছর পেরিয়ে গেলোও এখন পর্যন্ত তার কোনো উদ্যোগ নেই। সাম্প্রতিক অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচিকে ফ্লপ করার পদক্ষেপ হিসেবেই সরকার ডিসিসি নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নতুন ঘোষণায় আশা কিছুটা হলেও জেগে উঠেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *