বাংলাদেশে উচ্ছ্বাসকারীরা নজরদারিতে

Slider জাতীয়


ঢাকাঃ তালেবানদের আফগানিস্তান দখলকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠনগুলো উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে। একটি সংগঠন তালেবানদের প্রকাশ্যে অভিনন্দনও জানিয়েছে। তবে এটাতে শঙ্কার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেছেন, আমাদের দেশের জঙ্গি সংগঠনগুলোকে ইতিমধ্যে সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। সম্প্রতি তালেবানদের ক্ষমতা দখলের ইস্যুকে কেন্দ্র করে ২/১ জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে হয়তো উচ্ছ্বাস দেখা দিতে পারে বা দেখা দিয়েছে। যদিও একটি সংগঠন ইতিমধ্যে তালেবানদের ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে তাদেরকে অভিনন্দন জানিয়েছে। এটাতে শঙ্কার কিছু নাই। আমরা জঙ্গি সংগঠনগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি।

আমাদের সাম্প্রতিক অভিযান, ইন্টেলিজেন্স সবকিছু নিয়ে আমরা তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি। তাদের বড় কিছু করার সক্ষমতাকেও আমরা বিধ্বস্ত করে দিয়েছি। তারা যাতে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেদিকে আমাদের নজরদারি আছে।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে তালেবানরা তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে যে, তাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করে অন্য কোনো দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করবে না করতে দিবে না। আরও পরিষ্কার করেছে যে, বিশ্বের কোনো দেশে কোনো সন্ত্রাসী বা জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তাদের কোনো যোগসূত্র ও যোগাযোগ নাই। এমনকি বর্তমানে ক্ষমতা দখলের জন্য যারা যুদ্ধ করেছে তালেবানদের মধ্যে একজনও বিদেশি যোদ্ধা নাই। কিন্তু তালেবানদের সমর্থক বা তালেবানদের আদর্শকে যারা বিশ্বাস করে তাদের মাঝে কিছুটা উচ্ছ্বাস আসতে পারে বা দেখা দিতে পারে। আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছি দেশের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনগুলোর অনলাইন প্ল্যাটফরম ও সাইট ব্যবহার করে তালেবানদের সহযোগিতা করার জন্য তারা আহ্বান জানিয়েছে। যদিও এটার সঙ্গে তালেবানদের কোনো সমর্থন নাই। তারা নিজেরা স্বপ্রণোদিত হয়ে এই আহ্বান জানিয়েছে।

আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা একটা বিষয়ে নিশ্চিত তালেবানদের সঙ্গে বাংলাদেশের কেউ নেই। কারণ তালেবানরা নিশ্চিত করেছে তাদের কোনো বিদেশি যোদ্ধা নাই। সুতরাং বাংলাদেশেরও নাই। যদি কেউ কেউ আমাদের দেশ থেকে হিজরত করেও থাকে, তাহলে হয়তো অন্য কোনোভাবে অন্য কোনো জায়গায় গেছে। দেশের মধ্যেও হিজরত করে থাকতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তালেবানদের সঙ্গে এই মুহূর্তে কোনো বাংলাদেশি আছে বা কেউ আফগানিস্তানে গেছে এ রকম কোনো তথ্য আমাদের কাছে নাই। আমাদের কাছে ৪/৫ জন নিখোঁজের তথ্য আছে।

কয়েকজনের নাম পেয়েছি। তিনজনের পরিবার ইতিমধ্যে থানায় জিডি করেছে। তাদের নিয়ে কাজ করছি। তাদের অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। তিনজনের বাড়ি ঢাকার বাইরে। সিলেট, কুমিল্লা ও নোয়াখালী। তারা প্রত্যেকেই আনসার আল ইসলামের সদস্য ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। তবে নোয়াখালী থেকে যে নিখোঁজ তার অবস্থান দুবাইয়ে শনাক্ত করা হয়েছে। বাকি দু’জনের পরিবারের করা সিলেট দক্ষিণ সুরমা থানা ও কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার জিডি নিয়ে কাজ করছি।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, নিখোঁজরা হয়তো আফগানিস্তানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়েছে। বাড়ি থেকে বের হওয়া মানেই আফগানিস্তানে গেছে এমনটা না। তালেবানদের সঙ্গে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য অনলাইনে যে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল সেই আহ্বানে হয়তো ২/১ জন সাড়া দিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে থাকতে পারে। এমন নয় যে, তারা একদম সরাসরি চলে গেছে। পৌঁছানোর এ রকম কোনো তথ্য আমাদের কাছে নাই। তালেবানদের দোহা অফিসের মুখপাত্র ড. মো. নাঈম তার সাক্ষাৎকারে নিশ্চিত করেছেন তালেবানদের সঙ্গে কোনো বিদেশি যোদ্ধা নাই। বিভিন্ন সময় তালেবানরা অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও বৈদেশিক সম্পর্ক নিয়ে কথাবার্তাগুলো বলেছে সেখানেও এই বিষয়টা উঠে এসেছে। তাদের পক্ষ থেকে কোনো আহ্বানও নেই।

আফগান ইস্যুতে দেশে থাকা জঙ্গি মতাদর্শের রোহিঙ্গাদের তৎপরতা নিয়ে আসাদুজ্জামান বলেন, যদি কেউ কোনো দল বা সংগঠনের আদর্শকে সমর্থন করে আর তাদের যদি কোনো বিজয় দেখে তবে উচ্ছ্বাস আসবে। এ রকম যারা তালেবানদের সমর্থন করে, তাদের বিজয় বিশ্বাস করে তাদের মধ্যে একটু উচ্ছ্বাস থাকবেই। কিন্তু মূল বিষয় হচ্ছে, তাদের সংখ্যাটা কেমন। তাদের ক্যাপাসিটি কেমন। আমাদের সিটিটিসি’সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের ফলে তাদের সক্ষমতা একেবারেই নির্মূল করতে না পারলেও নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। তাদের নেটওয়ার্কটা আমরা ধ্বংস করে দিতে সক্ষম হয়েছি। আমরা জঙ্গিদের নিয়ে আগের মতই তৎপরতায় আছি। আমাদের এই মুহূর্তে কোনো হুমকিও নাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *