ভুয়া নির্বাচন, চাপিয়ে দেয়া উন্নয়ন ও উপরতলার মূল্যবোধ ভেঙে যেতে পারে এক মুহূর্তে

Slider সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী

‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে কাবুল বিমানবন্দর ধরনের দৃশ্য বাংলাদেশেও হতে পারে।’ ড. আসিফ নজরুলের এক লাইনের এই ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

মঙ্গলবার ওই স্ট্যাটাসের পর বুধবার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে নতুন একটি স্ট্যাটাস দিয়ে আগের স্ট্যাটাসের ব্যাখ্যা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।

এতে তিনি লিখেছেন, আমার একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে কোনো কোনো মহল থেকে যেভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হচ্ছে, আমি তাতে বিস্মিত ও মর্মাহত। আমার স্ট্যাটাসে কাউকে উল্লেখ করে কিছু বলা হয়নি। এখানে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশার কথা বলা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে বিজয়ী সরকার দৃঢ়ভাবে দুনীতিবাজ, সন্ত্রাসী ও জঙ্গীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে বলে এ ধরনের মানুষের মধ্যে ভীতি তৈরি হয়। এমন একটা কথা সম্ভাবনা হিসেবে আমার স্ট্যাটাসে বলার চেষ্টা করা হয়েছে।

এতে তিনি আরো লিখেছেন, আমি মনে করি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশার সাথে উগ্রবাদ বা মৌলবাদকে উৎসাহিত করার কোনো সম্পক নেই। উগ্রবাদী ও মৌলবাদীরা বরং সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিপক্ষ হয়। আশা করি আমার বক্তব্য নিয়ে ভুল বুঝাবুঝির অবসান হবে।

এর আগে মঙ্গলবার ‘আফগান সঙ্কট’ শিরোনামে আরেকটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন ড. আসিফ নজরুল। ওই স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, পশ্চিমা শক্তির প্রত্যক্ষ সাহায্যে গত ২০ বছর ধরে হামিদ কারজাই আর আশরাফ গনিরা আফগানিস্তান শাসন করেছে। উন্নয়ন, নারী শিক্ষা, মানবাধিকার, গনতন্ত্র, প্রযুক্তি- সব না কি তারা দিয়েছিল আফগানিস্তানের মানুষকে। তাহলে এতকিছুর পর তারা আফগান মানুষের মন জয় করতে পারলো না কেন? কেন তাদেরই সেনাবাহিনী তাদের জন্য যুদ্ধ করার তাগিদ অনুভব করেনি কাবুলে? কেন বর্বর আর পশ্চাৎপদ বলে অভিযুক্ত তালেবানরা তাদের চেয়ে এখনো জনপ্রিয়?

ড. আসিফ নজরুল বলেন, তালেবানদের গালি দেয়ার আগে এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা উচিত। আফগানিস্তানের মানুষকে একবার কম্যুনিস্ট আরেকবার সেক্যুলার বানানোর চেষ্টা হয়েছে, আফগান থাকতে দেয়া হয়নি। তালেবান উত্থানের পেছনে এর ভূমিকাও সৎভাবে চিন্তা করা উচিত।

ওই স্ট্যাটাসে আরো বলা হয়, আমি চাই, আফগানিস্তান হোক প্রকৃত অর্থে আফগান মানুষের। আমি চাই, আফগানিস্তানের উদাহরণ থেকে এই উপলদ্ধি আসুক যে ভুয়া নির্বাচন, চাপিয়ে দেয়া উন্নয়ন ও উপরতলার মূল্যবোধ তাসের ঘরের মতো ভেঙে যেতে পারে এক মুহূর্তে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *