হাওরপাড়ে নান্দনিকতার ছোঁয়া

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি


সুনামগঞ্জ: হাওর-নদীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুনামগঞ্জ। টাঙ্গুয়ার হাওর, যাদুকাটা নদী, দেশের সর্ববৃহৎ শিমুল বাগান, শহীদ বীরমুক্তিযোদ্ধা সিরাজ লেক, ডলুরা শহীদ স্মৃতিসৌধসহ জেলায় রয়েছে আরও অনেক দৃষ্টিনন্দন। তবে জেলার বিশ্বম্ভরপুরে স্বল্পসময়ে বেশ কয়েকটি পর্যটনস্পট গড়ে উঠায় নান্দনিকতার ছোঁয়া লেগেছে হাওরপাড়ে।

জানা যায়, হাওর ও নদীবেষ্টিত সীমান্ত উপজেলা বিশ্বম্ভরপুর। গত বছরের ১ ডিসেম্বর এখানকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদে যোগদান করেন মো. সাদি উর রহিম জাদিদ। তিনি সীমান্তের চ্যাংবিল এলাকার মেঘালয় পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ‘পাহাড় বিলাস’ নামে পর্যটনস্পট গড়ে তোলেন। ইউএনও’র অনুরোধে এলাকার আবু সুফিয়ান নামে একজন পর্যটনের জন্য ১০ শতক জমি সরকারকে দান করেন।

এরপর দৃষ্টিনন্দন কাঠের বেড়া দিয়ে পাহাড় বিলাসে পর্যটকদের বসার জন্য কাঠের বেঞ্চ, টেবিল, দুটি খাবারের দোকান, ছনের দুটি গোলঘর নির্মাণ করেন। এরপর প্রতিদিনই শতশত মানুষ সেখানে বেড়াতে যাচ্ছেন। এর পর উপজেলা সদরের সামনে করচার হাওরের পানির ওপরে ‘হাওর বিলাস’, উপজেলার প্রবেশদ্বার কারেন্টের বাজার এলাকায় করচার হাওরের বোয়াল মাছের ভাস্কর্য দিয়ে ‘বোয়াল চত্বর’ ও সরকারি জমিতে ‘করচারপাড় মার্কেট’ নির্মাণ করেন।

সম্প্রতি ‘হাওর বিলাস’, ‘বোয়াল চত্বর’ ও করচারপাড় মার্কেটের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। লকডাউন থাকায় বাইরের পর্যটকরা আসতে পারছেন না। তবে স্থানীয় লোকজন এসব স্পটে ঘুরতে যাচ্ছেন। উপজেলার কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা স্বপন কুমার বর্মন বলেন, বর্তমান ইউএনও উপজেলার সুন্দর স্থানগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করে ফুটিয়ে তোলছেন। তাঁর প্রচেষ্টায় নান্দনিকতার ছোঁয়া লেগেছে বিশ^ম্ভরপুরে। হাওর বিলাস, পাহাড় বিলাসের মাধ্যমে এলাকার লোকজন হাওর ও পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ পাচ্ছেন। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ বেড়াতে আসছেন।

সুনামগঞ্জ শহরের নতুনপাড়ার বাসিন্দা কবি কুমার সৌরভ বলেন, সদিচ্ছা ও শিল্পমন থাকলে একটি এলাকাকে কীভাবে সুন্দর করা যায় তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ বিশ্বম্ভরপুর। এখানকার চিরাচরিত প্রাকৃতিক ও নৈসর্গিক সৌন্দর্য এখন অনেকের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। অনেক সৌন্দর্যপিপাসু পরিব্রাজক এখন বিশ্বম্ভরপুরমুখী হয়েছেন। লকডাউন উঠে গেলে লোকসমাগম আরও বাড়বে।

বিশ^ম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাদি উর রহিম জাদিদ বলেন, এলাকার পর্যটনস্পটগুলোর সৌন্দর্য সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতে কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। এখন মানুষ এসব স্পটে বেড়াতে আসছেন। এ ছাড়া পলাশ বাজারে ‘হাওরবৃত্ত’ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মো. সাদি উর রহিম জাদিদ একজন পরিশ্রমী ও কর্মোদ্যমী কর্মকর্তা। সৃজনশীল কাজের প্রতি খুব আগ্রহী। তার কর্মপ্রচেষ্টায় বিশ্বম্ভরপুরে পর্যটনস্পটগুলোর বিকাশ হচ্ছে। প্রকৃতিপ্রেমী লোকজন সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ পাচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *