বরিশাল ও গাইবান্ধায় পেট্রোল বোমায় নিহত ৯

Slider জাতীয়

Boma_sm_580765203

ঢাকা: গাইবান্ধায় যাত্রীবাহী বাস ও বরিশালে ট্রাকে দুর্বৃত্তদের ছোড়া পেট্রোল বোমা হামলায় নয়জন নিহত ও অন্তত ২৯ জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে ও শনিবার ভোরে এ হামালার ঘটনা ঘটে।

শনিবার ভোরে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর বাজারের কাছে পেট্রোল বোমা হামলায় ট্রাকের চালক ও হেলপারসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। ট্রাকটি গাজীপুরের মাওনা এলাকা থেকে পোল্ট্রি ফিড নিয়ে বরিশাল যাচ্ছিল।

নিহতরা হলেন-ফরিদপুরের কৈজুরি ইউনিয়নের ডোমরাকান্দি গ্রামের সাবেক টিএসআই জাহাঙ্গীরের ছেলে ট্রাকচালক ইজাদুল ইসলাম (৩৫), ফরিদপুরের গোয়ালচামট মোল্লা বাড়ি সড়ক এলাকার কাদের বিশ্বাসের ছেলে হেলপার মন্নু বিশ্বাস (৪৫) ও ইজাদুলের শ্বশুর ব্যাংগ ডোবা গ্রামের মোতালেব শেখ (৬৫)।

গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ হোসেন  জানান, ট্রাকটি গৌরনদীর মাহিলারা এলাকার চ্যাগা বাড়ির স্কুল সংলগ্ন ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে পৌঁছুলে হরতালকারীরা ট্রাক লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে। এতে গাড়িতে আগুন লাগলে সেটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ট্রাকের চালক-হেলপারসহ ওই তিনজন মারা যান।

বরিশাল জেলার পুলিশ সুপার একেএম এহেসান উল্ল্যাহ এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চত করেছেন।

তিনি জানান, ঘটনার পরপরই দুর্বৃত্তদের আটক করতে অভিযান চলছে। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অভিযানে দু’জনকে আটক করা হয়েছে।

এদিকে গাইবান্ধায় যাত্রীবাহী বাসে দুর্বৃত্তদের ছোড়া পেট্রোল বোমায় তিন শিশুসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। এতে দগ্ধ হয়েছেন কমপক্ষে ২৯ যাত্রী।

শুক্রবার দিনগত রাত পৌনে ১১টার দিকে গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কের তুলসীঘাট এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।

নিহতদের মধ্যে সুজন (১০) নামে একটি শিশুর নাম পরিচয় জানা গেছে। সে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের তারা মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় শিশুটির মা সোনা বানুকে ক্লিনিক্যালি ডেড ঘোষণা করেছে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. মারুফুল ইসলাম।

তিনি বলেন, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত গাইবান্ধায় বাসে পেট্রোল বোমা হামলায় দগ্ধ ২০ রোগী রমেকে আনা হয়েছে। এদের মধ্যে শনিবার সকালে সুজন নামে এক শিশু মারা গেছে। দগ্ধদের মধ্যে সাতজনকে বার্ন ইউনিটে, অবজারভেশনে নয়জন, অর্থপেডিকে একজন ও সার্জারিতে তিনজনকে ভর্তি করা হয়। দগ্ধ রোগীদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদের মধ্যে ছয়জনের সবার শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাদের রক্তচাপ নিচে নেমে গেছে। তাদের বাঁচানো যাবে কিনা এ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। এদের মধ্যে আশঙ্কামুক্ত রয়েছে তিনজন।

তিনি আরো বলেন, আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, দেখা যাক কী হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচপীর থেকে নাপু এন্টারপ্রাইজের একটি বাস ৪০ জনেরও বেশি যাত্রী নিয়ে ঢাকার যাচ্ছিলো। পথে তুলসীঘাট এলাকায় বাসে পেট্রোল বোমা ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। এতে ঘটনাস্থলেই শিশুসহ চারজন ও রংপুর মেডিকেলে নেওয়ার পর আরো দুই শিশুর মৃত্যু হয়।

গাইবান্ধা সদর আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আবু হানিফ বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, গুরুতর আহত ১৭ জনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আটজনকে গাইবান্ধা সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

গাইবান্ধা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোশারফ হোসেন পেট্রোল হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *