ধন্যবাদ এই পুলিশ কর্তাকে

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী

photo.php----10271526_520455741397574_2319392042574743879_n

গ্রাম বাংলা রিপোট: গাজীপুর জেলার ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ সাখাওয়াত হোসেন। অপেক্ষাকৃত তরুন ওই পুলিশ কমকতা তার ফেইসবুক ওয়ালে একটি লেখা পোষ্ট করেছেন। লেখাতে তাকে একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান পুলিশ কমকতা হিসেবে মনে হয়। সকল পুলিশ যদি সাখাওয়াত হোসেনে মত হয় তবে হয়তোবা পুলিশের হারানো মযাদা ফিরে আসতে পারতো। পুলিশের প্রতি মানুষের অবিশ্বাস ও আস্থার জায়গাটি ফিরে আসুক এই প্রত্যমাশায় জনসংবাদের এই প্রতিবেদন ।

সহকারী পুলিশ সুপার সাখাওয়াত হোসেনের ফেইসবুক ওয়াল থেকে আনা একটি গল্প হুবহু পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো।

পশ্চিম জয়দেবপুরের সুরুজ মিয়া, চা বাগানের আবদুল মোতালিব আর ইসলামপুরের বাহারুম বাদশা । তিন জন মিলে কবে থেকে শিববাড়ী মোড়ে কমিউনিটি ট্রাফিক পুলিশের সদস্য হিসেবে কাজ করছেন ঠিক তারিখ টা বলতে পারেন নাই কেউ । “হবে অনেক দিন”-বাহারুম বাদশা জবাব দেন ।রোদে পুড়ে কালো হয়ে যাওয়া চামড়ায় বয়সের ভাজঁ । কমিউনিটি ট্রাফিক পুলিশের স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করে শিববাড়ী থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলোর পরিবহন সমিতি থেকে পাওয়া মাত্র কয়েক হাজার টাকাতেই চলে সংসার । গত নির্বাচনের আগে নভেম্বর ডিসেম্বরের রাজনৈতিক টানা পোড়েনের সময় হরতাল অবরোধে গাড়ি চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায় সারা দেশে । শিববাড়ী মোড় থেকে ছেড়ে যাওয়া গাড়িগুলোও এর ব্যক্রিতম ছিল না । গাড়ি বন্ধ হওয়াতে প্রতি মাসে পাওয়া সম্মানীভাতা পাওয়াটাও বন্ধ হয়ে যায় । সুরুজ আলীদের সংসারে তখন অভাব তবু আশায় ছিল তারা । নির্বাচনের পর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় গাড়ি চলা শুরু করলে হয়তো আবার সম্মানী ভাতাটা পাওয়া যাবে । জানুয়ারীতে নির্বাচনের পর গাড়ি চলা শুরু হলো ঠিকই । কিন্তু ভাতাটা আর পাওয়া যায় না । সংসার চালানোও কঠিন হয়ে পড়ে । এ গাড়ি ও গাড়ি থেকে দয়া দাক্ষিণ্য করে ৫/১০ টাকা তুলে কোনমতে স্ত্রী সন্তান নিয়ে দিনগুজার করেন এই তিন জন । প্রতিদিন যাই এই রাস্তা দিয়ে । এই লোক গুলো সংসার কিভাবে চলে এই কৌতুহল থেকে হঠাৎ একদিন ডেকে জিজ্ঞেস করলাম, “সারাদিন রাত এখানেই কাজ করেন, সংসার চলে কিভাবে?” কথার উত্তরে জানলাম কয়েক মাস ধরে তারা তাদের ভাতা টা পাচ্ছেন না । সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন । অনিধার্রিত ভাতা দেয়ার ব্যাপারে পরিবহন মালিক সমিতি বাধ্যও নয় । তবু আগে যেহেতু পেত ভাবলাম চেষ্টা করতে দোষ কি ?পরিবহণ মালিক সমিতির লোকজনের সাথে আলাপ করে তাদের ভাতাটা আবার চালু করার দায়িত্বটা দিলাম ট্রাফিক ইন্সপেক্টর ফারুকুর রহমান সাহেব কে । কয়েক দফা আলোচনা করেও কাজ হচ্ছিল না ।পরে মানবিক দিক বিবেচনা করে ভাতাটা চালু করার ব্যাপারে আমার অনুরোধটি তাদেরকে পৌছেঁ দিয়ে তাদেরকে বুঝাতে সক্ষম হন । দীর্ঘ ০৬ (ছয়) মাস পর এপ্রিল মাস থেকে নিয়মিতভাবে তারা তাদের সম্মানী ভাতাটা পাচ্ছেন । অবশেষে হাসি ফুটল ৩টি পরিবারের সদস্যদের । আজকে গিয়েছিলাম তাদের হলুদ অ্যাপ্রান দিতে আর ছবি তুলতে । আমি নিজেও তাদের সাথে ছবি তুললাম । তাদের সংসারের খোজঁ খবর নিলাম । গাড়িতে উঠার সময় মোতালিব জানালার কাছে বিদায় দিতে আসল । মোতলিবের চোখের কোণে তখন কৃতজ্ঞতার অশ্রু । বলল, স্যার আপনার সাথে তোলা ছবিটা দিয়েন, বাধিয়ে রাখবো । কাউকে একটু অনুরোধ ,একটু চেষ্টা করলে ৩টি পরিবারের মানুষের জীবিকার ব্যবস্থা যদি হয় তবে এমন অনুরোধ, এমন চেষ্টা আমি হাজারবার করতে রাজি আছি ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *