পিপিই পরে করোনা ওয়ার্ডে বিয়ে, স্বামীকে রেখে ফিরলেন নববধূ

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

সময় এবং নদীর স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না। আর তো করোনা! সময় বয়েই যায়। তাই ভালবাসার মানুষকে কাছে পেতে মরিয়া হয়ে ওঠেন ২৩ বছর বয়সী কনে অভিরামি। তার বর শরতমন এস। তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে। কিন্তু লগ্ন বলে কথা! আগে থেকে নির্ধারিত বিয়ের লগ্ন পেরিয়ে যাচ্ছে। তাই শরতমনকে বর হিসেবে পেতে অভিরামি সোজা চলে গেলেন করোনা ওয়ার্ডে। পরে নিলেন পিপিই।

বিয়ের প্রচলিত পোশাক, অলঙ্কারের পরিবর্তে তার শরীরে জায়গা করে নিল পিপিই। এই পোশাকেই কেরালার উপকূলীয় আলাপ্পুঝা বন্দনা মেডিকেল কলেজে দু’জনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন। সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতায় কনেকে মঙ্গলসূত্র পরিয়ে দেন শরতমন এস। পরিয়ে দেন ফুলের মালা। নিজের মা এবং কনের কয়েকজন আত্মীয়ের উপস্থিতিতে বিশেষ এক ওয়ার্ডে তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। এ খবর দিয়েছে ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআই। এতে বলা হয়েছে, তাদের বিয়ে ঠিক হয়েছিল এক বছর আগে। কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে রোববার ঠিক করা হয়েছিল বিয়ের দিনক্ষণ। শরতমন কাজ করেন উপসাগরীয় অঞ্চলে। তার মা ঝিঝিমল সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মধ্যপ্রাচ্য থেকে এ সময়ে বিয়ে উপলক্ষে দেশে ফেরেন শরতমন। এসেই তিনি কোয়ারেন্টিনে যান। কিন্তু প্রথম ১০ দিনে তার মধ্যে কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি করোনার। বুধবার সন্ধ্যায় হঠাৎ মা ও ছেলের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাদেরকে থাথামপালিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এতে করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। পরে তাদেরকে ওই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়।

কিন্তু উভয় পক্ষের পরিবার চাইছিল যথাসময়ে বিয়ে সম্পন্ন করতে, যাতে লগ্নভ্রষ্ট না হন কনে। ফলে তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হন। তারা বিয়ের অনুমতি দেন। ডিস্ট্রিক্ট কালেকটর এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেয়ার পর তাদের বিয়ের আয়োজন করা হয়। তবে বলে দেয়া হয় স্বাস্থ্যবিধি। এক্ষেত্রে কনেকে পরতে হবে পিপিই। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতায় উপস্থিত থাকতে পারবেন এক বা দু’জন আত্মীয়। সেই শর্ত মেনেই তারা বিয়ে করলেন। বিয়ের পর স্বামী শরতমনকে হাসপাতালে রেখেই নববধূ অভিরামিকে ফিরে যেতে হলো তার আঙ্কেলের বাড়িতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *