হেফাজতে ইসলামের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসা কর্তৃপক্ষ বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছে, মাদরাসাটির বিরুদ্ধে দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে ষড়যন্ত্র চলছে।
মাদরাসার পরিচালনা পর্ষদ এবং শিক্ষকদের পক্ষে একটি লিখিত বিবৃতিতে এরকম ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।
লিখিত বিবৃতিটি পাঠ করেন মাদরাসার শিক্ষক ড. নুরুল আফসার। সেখানে বলা হয়, ‘দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসার প্রতিষ্ঠার ১২০ বছর পর কিছু আদর্শচ্যুত ও স্বার্থান্বেষী দুষ্কৃতিকারী দেশের ভেতরে ও দেশের বাইরে উম্মুল মাদারেসের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার খবর পাওয়া যাচ্ছে।’
এই বিবৃতি দেয়া হলো এমন সময়ে, যখন হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে সরকারের গ্রেফতার অভিযান চলছে।
সম্প্রতি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় সরকারের সাথে এ নিয়ে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল হেফাজত-সমর্থিতরা।
এরপর সরকার সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার অভিযান শুরু করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং হাটহাজারীসহ বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক সহিংসতা এবং প্রাণহানির ঘটনার পর গ্রেফতার অভিযানের মুখে হেফাজত চাপে পড়েছে।
কওমি মাদরাসাভিত্তিক হেফাজতে ইসলাম দলের উদ্ভব হয়েছে এই হাটহাজারী মাদরাসা থেকে। এই মাদরাসার পরিচালক জুনায়েদ বাবুনগরী বর্তমানে হেফাজতে ইসলামের আমির।
তবে সাম্প্রতিক গ্রেফতার অভিযান প্রসঙ্গে হাটহাজারী এই মাদরাসার বিবৃতিতে সরাসরি কিছু বলা হয়নি।
লিখিত বক্তৃতায় জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, ‘অত্র অঞ্চলের ইমাম, খতিব এবং সর্বস্তরের তৌহিদী জনতার কাছে আমাদের বিশেষ আহ্বান থাকবে, আল্লাহ না করুন, যখনি আপনারা শুনবেন আপনাদের প্রিয় এই উম্মুল মাদারেস দুষ্কৃতিকারীদের কোনো ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে, তখনি আপনারা স্ব স্ব অবস্থান থেকে উম্মুল মাদারেসের সহযোগিতায় তাৎক্ষণিকভাবে এগিয়ে আসবেন।’
‘অপরদিকে দুষ্কৃতিকারীদের প্রতিও আমাদের সুস্পষ্ট সতর্কবার্তা, ষড়যন্ত্র বন্ধ করুন, অন্যথায় আল্লাহর ইচ্ছায় ঘৃণিত ও লাঞ্ছিত হয়ে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বর্তমানে বন্ধ থাকলেও কওমি মাদরাসায় দান করতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
আহমদ শফীর মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত ১২ এপ্রিল আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সেখানে হেফাজতে ইসলামের বর্তমান আমির জুনায়েদ বাবুনগরী, আজিজুল হক ইসলামাবাদীসহ ৪৩ জনের নাম উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি