করোনা পরীক্ষায় রেকর্ড, একদিনে ৩০ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ২৮০৯ ভয়ঙ্কর বার্তা

Slider জাতীয়

দেশে হু হু করে বাড়ছে করোনা রোগী। সঙ্গে দ্রুতই দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিলও। পহেলা মার্চ থেকেই ফের করোনা সংক্রমণের গতি পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটছে। এটা যেন ভয়ঙ্কর বার্তা দিচ্ছে মানুষকে। গত ৭ মাসের মধ্যে একদিনেকরোনায় সবচেয়ে বেশি মানুষ শনাক্ত হয়েছেন। শনাক্তের হার ১১ শতাংশ ছাড়িয়েছে। যা তিন সপ্তাহ আগেও ৩-এর নিচে ছিল। একদিনে সর্বোচ্চ ২৫ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে দেশে।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৮০৯ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ৩০ জনের। আড়াই মাসের মধ্যে একদিনে এটি সর্বোচ্চ মৃত্যু। এর আগে গত বছরের ২০শে আগস্ট একদিনে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৮৬৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এর আগে এ বছরের ৭ই জানুয়ারি করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ ৩১ জনের মৃত্যু হয়। দেশে করোনায় এখন পর্যন্ত সরকারি হিসাবে মোট শনাক্ত হলেন ৫ লাখ ৭৩ হাজার ৬৮৭ জন। এ পর্যন্ত মোট মারা গেছেন ৮ হাজার ৭২০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭৫৪ জন। মোট সুস্থ ৫ লাখের কিছু বেশি।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা সংগৃহীত হয়েছে ২৬ হাজার ১টি। নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৫ হাজার ১১১টি। এ পর্যন্ত দেশে করোনার মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪৪ লাখ ৩৪ হাজার ২৩০টি। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় গত ২৪ ঘণ্টায় রোগী শনাক্তের হার ১১ দশমিক ১৯ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার ১ দশমিক ৫২ শতাংশ।

দেশে বর্তমানে ২১৯টি পরীক্ষাগারে করোনার নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআরের মাধ্যমে পরীক্ষা হচ্ছে ১১৮টি পরীক্ষাগারে, জিন-এক্সপার্ট মেশিনের মাধ্যমে পরীক্ষা হচ্ছে ২৯টি পরীক্ষাগারে। আর র‌্যাপিড অ্যান্টিজেনের মাধ্যমে পরীক্ষা হচ্ছে ৭২টি পরীক্ষাগারে। ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩০ জনের মধ্যে পুরুষ ২৫ জন এবং নারী ৫ জন। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে পুরুষ মারা গেছেন ৬ হাজার ৫৯৫ জন এবং নারী মারা গেছেন ২ হাজার ১২৫ জন। শতকরা হিসাবে পুরুষ ৭৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ এবং নারী মারা গেছেন ২৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের উপরে ২০ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে আছেন ৭ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ জন এবং ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩০ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ২৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৪ জন, খুলনা ও সিলেট বিভাগের আছেন ১ জন করে। হাসপাতালে মারা গেছেন ২৯ জন এবং বাসায় ১ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৭৯০ জন এবং ছাড় পেয়েছেন ৬৩৪ জন। কোয়ারেন্টিনে এ পর্যন্ত মোট যুক্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৩৯ হাজার ১৫৮ জন, মোট ছাড় পেয়েছেন ৬ লাখ ৫ হাজার ৮৮১ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৩ হাজার ২৭৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৫৪ জন, ছাড় পেয়েছেন ৯১ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে মোট যুক্ত হয়েছেন ১ লাখ ২ হাজার ৪১৯ জন, ছাড় পেয়েছেন মোট ৯২ হাজার ৩০৩ জন। এখন আইসোলেশনে আছেন ১০ হাজার ১১৬ জন।

টিকা নেয়ার সংখ্যা দিন দিন কমছে: দেশে করোনার টিকা নেয়ার সংখ্যা দিন দিন কমছে। দেশে টিকা নেয়ার সর্বোচ্চ সংখ্যা ২ লাখ ৬১ হাজার উঠেছিল। গতকাল সারা দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরুর ৩৬তম দিনে ভ্যাকসিন নিয়েছেন ৭০ হাজার ৯৩৩ জন। যা আগের দিনের তুলনায় ১০ হাজার কম মানুষ টিকা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় নিয়েছেন ৯ হাজার ৮০৫ জন। এ পর্যন্ত দেশে মোট টিকা নিয়েছেন ৪৯ লাখ ১১ হাজার ৯০২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৩০ লাখ ৮০ হাজার ৭৩৩ জন এবং নারী ১৮ লাখ ৩১ হাজার ১৬৯ জন। টিকা নেয়ার পর সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে মোট ৯১৭ জনের। অন্যদিকে গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত টিকা নিতে অনলাইনে মোট নিবন্ধন করেছেন ৬২ লাখ ৮২ হাজার ৮৮৪ জন। গত ২৭শে জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে গণটিকাদান শুরু হয় ৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *