গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: অলি

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বীর বিক্রম। তিনি বলেছেন, দলাদলি না করে জাতিকে কীভাবে ঐক্যবদ্ধ করা যায় সেটাই চিন্তা করা উচিত। বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রথম ধ্বংস করা হয়েছিল ১৯৭৪ সালে, সর্বশেষ ধ্বংস হয়েছে ২০১৪ সালে। এখন দেশে গণতন্ত্র কীভাবে ফিরে আসবে সেটাই চিন্তা করা উচিত। মানুষের মৌলিক অধিকার কীভাবে ফিরে আসবে সেটা চিন্তার বিষয়।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে এলডিপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
কর্নেল অলি বলেন, ৭০ এর নির্বাচনে ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ। আসলে এটা তো আওয়ামী লীগ জয়লাভ করেনি। নির্বাচন হয়েছিল পাকিস্তান বনাম পূর্ব পাকিস্তান।
পাঞ্জাব বনাম বাঙালি। বাঙালিরা জয়লাভ করেছিল আওয়ামী লীগ জয়লাভ করেনি সেই নির্বাচনে। আমরা যখন শুনতে পেলাম ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু ভাষণ দেবেন, তখন আমরা প্রস্তুতি নিয়েছিলাম যে, তার ভাষণের পরেই আমরা পাকিস্তানীদের উপর ঝাপিয়ে পড়বো। আমরা যে আশা-আকাঙ্কা এবং উদ্দীপনা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনেছিলাম সেটা পূরণ হয়নি।
জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন উল্লেখ করে কর্নেল অলি বলেন, ওনার ঘোষণার পরেই সাধারণ মানুষের মধ্যে চেতনা এসেছিল যে আমাদেরকেও যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে আপামর জনতা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তো না। আর বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। আর সরকারকে বলতে চাই, জিয়াউর রহমানের পেছনে লেগে কোন লাভ নেই। জাতির সামনে আমি ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছি, জিয়াউর রহমানের খেতাব যদি বাতিল করা হয় তাহলে তাকে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করা হবে।
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা স্বাধীনতা এনেছি। আপনাদের দলের লোকেরা স্বাধীনতা আনেনি। আপনাদের লোকেরা তখন কলকাতায় ছিলেন। আর আমরা ছিলাম বন্দুক হাতে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত থেকে বিএসএফ এর মাধ্যমে গোলাবারুদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করা হয়েছিল। এটা অস্বীকার করলে হবে না। ভারতের সাহায্য ছাড়া তখন স্বাধীনতা যুদ্ধ করাটা অনেকটা কঠিন হতো। আমি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছি, মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সাহায্য খুবই প্রয়োজন ছিল।
অলি আহমেদ আরও বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর কথা বলে কয়েক হাজার কোটি টাকা বাজেট করে সারা দেশে সিনেমা দেখানো হচ্ছে। এটা কাদের টাকা? এটা জনগণের ট্যাক্সের টাকা। আজকে বাংলাদেশের ৩০ ভাগ লোক না খেয়ে আছে। কারণ করোনার কারণে অনেকেরই কর্মকাণ্ড বন্ধ। শুধু ঢাকার চিত্র দেখেই বাংলাদেশের চিত্র বোঝানো যাবে না। ন্যূনতম তিন ভাগ লোক দুই বেলা খেতে পারে না করোনার কারণে। তাই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের পেছনে এতো টাকা খরচ না করে গরিবদের খাবার ব্যবস্থা করেন। তামাশা বন্ধ করেন, গণতন্ত্র পুনরায় ফিরিয়ে দিন। আমাদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিন। এটাই বড় প্রয়োজন। না হলে যা হওয়ার তাই হবে।
এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহম্মদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সভাপতি এড. এহসানুল হুদাসহ এলডিপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *